নভেম্বর ২৩, ২০২৪

শনিবার ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

পাওনা টাকা চাওয়ায় চাচাতো ভাইকে হত্যা, কুমিল্লায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

Cumilla Chief Judicial Magistrate Court
কুমিল্লা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (ছবি: রাইজিং কুমিল্লা)

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ফারুক আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বেলা ১২টায় এই রায় দেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবকের নাম ফারুক আহমেদ। তিনি মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে মো. রফিক মিয়া, দেবিদ্বারের মাধবপুর এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে মো. নাজমুল শিকদার, ভিংলাবাড়ি এলাকার চান মিয়ার ছেলে মো. মান্নান মিয়া ও রাজু মিয়ার ছেলে মো. সুমন মিয়া। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন।

আইনজীবী রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ এলাকার ফারুক আহমেদ। ৭ ডিসেম্বর স্থানীয় একটি বালুর মাঠ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবার। ফারুক আহমেদের কোম্পানীগঞ্জ বাজারে একটি কাপড়ের দোকান ছিলেন। তার চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম তার কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা ধার নেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরেও রফিক সেই টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। যে কারণে ফারুক প্রায়ই তার কাছে টাকা চাইতো। একবার রফিকের ভগ্নিপতি মান্নান মিয়ার সামনে টাকা চাইলে ক্ষিপ্ত হন রফিক। মান্নান ও রফিক পরিকল্পনা করে আরেক ভগ্নিপতি সুমনকে খবর দেয়।

পরে তারা তিনজন পাশের দেবিদ্বার উপজেলার পরিচিত নাজমুল শিকদারকে ভাড়া করে। এরপর ফারুককে টাকা ফেরত দেবে বলে ডেকে আনে। পরে স্থানীয় একটি মাঠে তাকে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ বালুচাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনার ৫ দিন পর অর্ধগলিত মরদেহ শনাক্ত করে নিহতের পরিবার। এ ঘটনায় রফিকের ভগ্নিপতি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করে এবং পরিকল্পনামাফিক হত্যার কথা জানায়।

এ বিষয়ে নিহতের বাবা মো. মোস্তফা বলেন, ১১ বছর পর আমার ছেলেকে হত্যার বিচার পেয়েছি। আমার তিন ছেলে ছিল। এই ছেলেটা আমার বেশি আদরের ছিল। তাকে খুন করলো আমার আত্মীয়স্বজনেরা। আমি তো ভাবিওনি এমন কিছু। আমি প্রথমে নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। মামলাও করি অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে। তদন্ত কর্মকর্তা না বের করলে আমি বিশ্বাস করতে পারতাম না, পাওনা টাকার জন্য আমার ছেলেকে তারা হত্যা করেছে। যে উপকার করলো তাকেই হত্যা করলো। এখন আমার একটাই দাবি, রায় দ্রুত কার্যকর করা হোক

এ বিষয়ে আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশাবাদী উচ্চ আদালত রায়টি বহাল রাখবেন।