পাকিস্তানে গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ফলাফলে কারচুপি করা হয়েছে দাবি করে পদত্যাগ করেছেন রাওয়ালপিন্ডির নির্বাচন কমিশনার লিয়াকত আলী চট্টা। খবর ডন, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
শনিবার রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টা বলেছেন, অনেকবার আত্মহত্যার চিন্তা করেছি। যাইহোক, আমি পরে জাতিকে ‘সত্য’ বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেন আমি অনৈসলামিকভাবে মরতে যাব? তিনি প্রশ্ন করে বলেন।
কমিশনার লিয়াকত আলী চট্টা দাবি করেন, যেসব প্রার্থীরা নির্বাচনে হেরেছেন তাদের জেতানোর জন্য তার ওপর চাপ দেয়া হয়েছিল। কারচুপিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান বিচারপতি জড়িত দাবি করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি এই সমস্ত অন্যায়ের দায় নিচ্ছি। আপনাদের বলছি যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রধান বিচারপতিও এতে সম্পূর্ণভাবে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, সমস্ত আমলাতন্ত্রের কাছে আমার অনুরোধ, এই সমস্ত রাজনীতিবিদদের সাথে অবিচার করবেন না।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দেশটির সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৫টি আসন, পিএমএল-এন ৭৫টি এবং পিপিপি ৫৪টি আসন লাভ করে। তবে পিটিআইসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পরাজিত প্রার্থীরা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন।
ইতোমধ্যে সিন্ধু হাইকোর্টে করাচি এবং হায়দ্রাবাদের ৫৮টি নির্বাচনি এলাকার ফলাফলের বিরুদ্ধে পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।
সিন্ধু হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, ইসিপি সমস্ত পক্ষের অভিযোগ শুনে এবং আইন অনুসারে ২২ ফেব্রুয়ারির আগে সিদ্ধান্ত নেবে এবং ফর্ম ৪৫ বা ৪৭-এ আবেদনকারীদের রেকর্ড পরীক্ষা করবে। রায়ে আরও বলা হয়, যেকোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে তা অপসারণ করা উচিত।
এদিকে, কারচুপির বিরুদ্ধে বেলুচিস্তান, সিন্ধু এবং দেশের অন্যান্য অংশে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ন্যাশনাল পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, জমিয়ত-উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামী, বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি- বিএপি, বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি- বিএনপি (মেঙ্গল), পাশতুনখাওয়া মিল্লি আওয়ামী পার্টি, পাশতুনখাওয়া ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পুনর্গণনার দাবিতে এবং বেলুচিস্তানে ঘোষিত ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান সড়ক ও জেলা রিটার্নিং অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে।