দেশের সেনাবাহিনীর হাতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরসহ পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষা ভবন ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে শিক্ষা ভবনের সামনের চৌরাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন তারা।
আন্দোলনের মুখপাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, আমরা আমাদের দাবিগুলোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়কে তিনদিনের একটি আল্টিমেটাম দিব এবং হিট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আজকের মধ্যেই লিখিত দিতে হবে।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তামজিদ হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১টা হল রয়েছে, তা স্বত্বেও তাদের পাইলট প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। অথচ জগন্নাথ সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের কেন যুক্ত করা হলো না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের দাবির সুরাহা না পাচ্ছি, ততক্ষণ এখানে আমরা অবস্থান ও ঘেরাও কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নির্মাণ করা হচ্ছে। আমরা জবিয়ানরা পিছিয়ে আছি। আমাদের (শিক্ষার্থীদের) সারাদিন টিউশনি করতে হয়। আমাদের দাবি সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস কাজ দিতে হবে। ইউজিসি যে হিট প্রকল্প নিয়েছে তা বৈষম্যমূলক।
শিক্ষার্থীদের দেওয়া দাবি গুলো হলো-
- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাতদিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে।
- শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ ঘোষণা করতে হবে যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে।
- অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে।
- সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণাকৃত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে আন্দোলনে উপস্থিত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।
জবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইকবাল হোসেন শিকদার বলেন, শিক্ষার্থীদের যেকোনো ন্যায্য আন্দোলনে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা প্রত্যক্ষভাবে আন্দোলনে যুক্ত আছি। সুষ্ঠুভাবে দ্রুততার সঙ্গে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সম্পন্ন করার জন্য সেনাবাহিনীর নিকট কাজ হস্তান্তর করতে হবে। সেই সঙ্গে হিট প্রকল্পে জবিয়ানদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘এক দুই তিন চার, ক্যাম্পাস আমার অধিকার’, ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও করো, মন্ত্রণালয় ঘেরাও করো’, ‘বৈষম্য মানব না, মানি না মানব না’, ‘দিতে হবে দিয়ে দাও, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীকে দাও’, ‘যদি থাকে হায়া লাজ, সেনাবাহিনীকে দাও কাজ’সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।