
অবশেষে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এলো এক বড় ধরনের স্বস্তির বার্তা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি অর্থবছরের ঋণ প্যাকেজের অংশ হিসেবে আগামী জুন মাসেই ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড় করতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এই ঋণ কিস্তিটি এখন আলোর মুখ দেখতে চলেছে।
টাকার বিনিময় হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে নমনীয়তার প্রশ্নে বেশ কিছুদিন ধরে আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের মতবিরোধ চলছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নবনিযুক্ত গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে আইএমএফ-এর সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মাধ্যমে সে জটিলতার অবসান হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আজ (মঙ্গলবার, ১৩ মে) গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, বিনিময় হার ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি নিয়ে প্রথমে আপত্তি জানালেও শেষ পর্যন্ত আইএমএফ তা মেনে নিয়েছে। এর ফলে, ঋণ প্যাকেজের তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ১.৩ বিলিয়ন ডলার জুনেই ছাড় করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আগামী বুধবার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানেই আইএমএফের সঙ্গে ঋণ ছাড় সংক্রান্ত চূড়ান্ত সমঝোতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র আরও জানিয়েছে, বর্তমানে প্রবাসে অবস্থানরত গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি এই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
অর্থনীতি বিশ্লেষকদের অভিমত, আইএমএফের এই ঋণ ছাড় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে। এর পাশাপাশি, দেশের বিনিয়োগকারী এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর আস্থাও বৃদ্ধি পাবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য তিন বছর মেয়াদী ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। এই কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যেই দুটি কিস্তি ছাড় করা হয়েছে। আসন্ন এই তৃতীয় কিস্তি সহ মোট ছাড়কৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থ দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।