
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অন্যতম সেরা আবিষ্কার চ্যাটজিপিটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে করেছে আরও সহজ। মুহূর্তেই যেকোনো প্রশ্নের উত্তর, কবিতা লেখা থেকে শুরু করে রেসিপি, গণিত সমাধান, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট তৈরিতেও এটি দারুণ সহায়ক। তবে এই সুবিধার আড়ালে লুকিয়ে আছে কিছু বিপদ। অসাবধানতাবশত কিছু প্রশ্ন আপনাকে ফেলতে পারে মারাত্মক ঝামেলায়। তাই চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
চ্যাটজিপিটি আপনার সকল জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে পারলেও কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এর অপব্যবহার আপনাকে গুরুতর আইনি জটিলতায় ফেলতে পারে। জেনে নিন কোন ধরনের প্রশ্নগুলো চ্যাটজিপিটিকে ভুলেও করবেন না:
১. অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত প্রশ্ন
কৌতূহলবশতও কখনো চ্যাটজিপিটিকে এমন কোনো প্রশ্ন করবেন না যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অপরাধের সঙ্গে জড়িত। যেমন:
- বিস্ফোরক তৈরি পদ্ধতি: নিছক মজার ছলেও যদি আপনি ‘কীভাবে বিস্ফোরক তৈরি করা যায়’ এমন প্রশ্ন করেন, তাহলে চ্যাটজিপিটি তাৎক্ষণিকভাবে লগ আউট হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে লগ ইন করতে আপনাকে বেশ বেগ পেতে হবে।
- হত্যা বা ক্ষতি সাধনের উপায়: ‘কীভাবে কাউকে হত্যা করা যায়’ অথবা অন্য কারো ক্ষতি করার কোনো উপায় জানতে চাওয়া একটি মারাত্মক ভুল প্রশ্ন। এসব প্রশ্ন সরাসরি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করে। চ্যাটজিপিটি আপনার এই ধরনের প্রশ্নগুলো রেকর্ড করে রাখে এবং এর জন্য যেকোনো সময় আপনি বিপদে পড়তে পারেন।
চ্যাটজিপিটি এমন প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে অক্ষম এবং এ ধরনের প্রশ্ন তার ব্যবহারের নীতিমালার পরিপন্থী।
২. ব্যক্তিগত বা সংবেদনশীল তথ্য জানতে চাওয়া
চ্যাটজিপিটি তথ্যের বিশাল ভান্ডার হলেও, কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা সংবেদনশীল তথ্য জানতে চাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যেমন:
- ব্যাংকের তথ্য বা ব্যক্তিগত বিবরণ: আপনি যদি কারো ব্যাংকের বিস্তারিত তথ্য বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত বিবরণ জানতে চান, চ্যাটজিপিটি তা কখনোই জানাবে না। উল্টো এমন প্রশ্ন আপনাকে আইনি ঝামেলায় ফেলতে পারে। এই ধরনের তথ্য চাওয়া অন্যের সুরক্ষার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
মনে রাখবেন, চ্যাটজিপিটি একটি AI মডেল। এটি নিজস্ব কোনো বিচারবুদ্ধি রাখে না এবং এর কাছে সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষিত থাকে না।
৩. একাডেমিক অসততার জন্য ব্যবহার
শিক্ষাক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে, তবে পরীক্ষার হলে সরাসরি উত্তর লেখার জন্য এর সাহায্য নিলে সমস্যায় পড়তে পারেন। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট বা পরীক্ষার উত্তর লেখার বিষয়টিকে একাডেমিক অসততা হিসেবে দেখে।
চ্যাটজিপিটি একটি শক্তিশালী টুল, যা আপনার জীবনকে সহজ করতে পারে। তবে এর সঠিক এবং দায়িত্বশীল ব্যবহার অপরিহার্য। কৌতূহল বা মজার ছলে করা কিছু প্রশ্ন আপনার জন্য ‘মজা’ থেকে ‘সাজা’ হয়ে উঠতে পারে।