
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা অভিযোগ করেছেন যে, ছাত্রশিবির বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির পরিবেশকে ‘বিষাক্ত’ (টক্সিক) করে তুলেছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উমামা ফাতেমা তার পোস্টে তীব্র ভাষায় লিখেছেন, “যারা এতদিন ছাত্রলীগের মধ্যে মিশে সারভাইভ করার ভান ধরে, সেই ছাত্র সংগঠন কিনা এখন আরেকজনরে ট্যাগ দিতে আসে। গত ১৫ বছর ছাত্রলীগের হয়ে এদের অনেকে হলে হ্যাডম দেখাতো।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ছাত্রশিবির ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির পরিবেশকে টক্সিক করে তুলেছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা আরও লেখেন, শিবিরের “সাধারণ ছাত্র” সেজে বারংবার ছাত্রদের ‘স্যাবোটাজ’ করার কারণে আসল সাধারণ ছাত্রদের কথা বলার পরিবেশ সংকুচিত হয়েছে। তার মতে, শিবিরের এই ‘ডিস্টার্বেন্সের’ কারণে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র রাজনীতির নতুন ধারা নিয়ে কোনো প্রকার সুস্থ আলোচনা শুরু করা যায়নি।
একটি অদ্ভুত ঘটনার উল্লেখ করে উমামা ফাতেমা বলেন, গত ৮ মার্চ আছিয়া ধর্ষণের বিচারের দাবিতে সুফিয়া কামাল হল থেকে মেয়েরা মিছিল বের করে গোটা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। “হলপাড়ায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আমরা স্লোগান দিচ্ছিলাম। কিন্তু কোনো ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ হলপাড়া থেকে বের হচ্ছিল না। এই হচ্ছে এদের সাধারণ শিক্ষার্থীগিরির নমুনা। পান থেকে চুন খসলে যেখানে এরা মিছিল বের করে সেখানে আছিয়ার জন্য এরা মিছিলে যুক্ত হতে পারে না।”
তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে লিখেছেন, “এসব বাটপারদের থেকে সাবধান থাকুন।” উমামা ফাতেমা আরও দাবি করেন, ছাত্রলীগের আমলে এই সংগঠনটি লীগের বিরুদ্ধে ন্যূনতম সংগ্রাম করেনি, উল্টো অন্য ছাত্রদের ওপর নির্যাতনকে বৈধতা দিয়েছে। “আর এখন যাকে তাকে লীগের দোসর ট্যাগ দিয়ে নিজের পলিটিক্যাল এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে এই বাটপাররাই,” যোগ করেন তিনি।
উমামা তার পোস্টে স্মরণ করিয়ে দেন, “আমার খুব পরিষ্কার মনে আছে, ২০২৪ সালের ডামি ইলেকশনের বিরুদ্ধে আমরা ৩১ জুলাই থেকে রাজু ভাস্কর্যে ডামি নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলন করছিলাম।” তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে লেখেন, “এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তৎকালীন লীগের আড়ালে থাকা কিছু ভাইব্রাদার আন্দোলন করছিল ঢাবিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলের জন্য।” তিনি জানান, তারা তখন সেই আন্দোলনকারীদের তাদের মূল আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, “এরা ২০২৪ নির্বাচনের পুরোটা সময় মুখ ফুটে একটা শব্দও বের করেনি। মানে কি বলব!”
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “যাদের কাছে একটা দেশে দিনে দুপুরে ভোট ডাকাতির টপিক থেকে শেখ হাসিনার তৈরি প্রশাসনের আনা ট্রান্সজেন্ডার কোটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এরা এখন জুলাই এর ঠিকাদারি ব্যবসা করে। এই ঠিকাদারদের হাতে জুলাইও নিরাপদ না।”