
মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রশাসন। অভিনব কায়দায় ক্রেতা সেজে মহাসড়কের পাশের হোটেলগুলোতে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে কারাদণ্ডও দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল শনিবার (২৮ জুন) রাত ৯টা থেকে শনিবার (২৯ জুন) ভোর ২টা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ জামাল হোসেন, চৌদ্দগ্রাম-এর নেতৃত্বে এবং সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত পাঁচটি দল (প্রতি দলে ২/৩ জন) চারটি বাইক ও একটি ভাড়া করা ট্রাক ব্যবহার করে এই অভিযানে অংশ নেয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অভিযানের শুরুতে ইউএনও কর্তৃক গঠিত দলগুলো কয়েকটি হোটেল থেকে মাদকদ্রব্য ক্রয় করে, যা প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই কৌশলগত পদক্ষেপের মাধ্যমে মাদক বিক্রেতাদের মুখোশ উন্মোচন করা সম্ভব হয়।
অভিযানে মোট ৯১ পুরিয়া গাঁজা এবং ৩৮ পিস ইয়াবা ও মাদক সেবনের সরঞ্জামসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। আটককৃত মাদকদ্রব্যগুলো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে এগুলো ধ্বংস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযানের সময় কয়েকটি হোটেলের মালিক/ম্যানেজার পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নাবালক শিশুদেরকে মাদক বিক্রির কাজে ব্যবহার করার বিষয়টি উঠে আসে। এই কারণে আটক করা গেলেও নাবালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানা গেছে।
তবে, বাবুর্চি বাজারের জমজম হোটেল থেকে আটক করা ৪ জন আসামিকে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্ট আইনের তফসিলভুক্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী বিচার করা হয়। প্রত্যেককে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা অর্থদণ্ডসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
মাদককে একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি হিসেবে উল্লেখ করে, উপজেলা প্রশাসন সর্বস্তরের জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।