বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিচার করতে গিয়ে নারীকে পেটানো ইউপি মেম্বারের ভিডিও ভাইরাল

রাইজিং ডেস্ক

প্রতীকি ছবি/সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে বিচার করতে গিয়ে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছে একজন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার ২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে জেলাজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও বুধবার (২১ অক্টোবর) থেকে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একজন নারীকে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে লাঠিপেটা করছেন শ্রীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বজলুর রহমান। ওই নারীর পাশে একজন পুরুষকেও একই ভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ সময় নির্যাতিতা ওই নারীকে যন্ত্রণায় ‘বাবা বাবা’ বলে চিৎকার করতে শোনা গেছে। অভিযুক্ত বজলুর রহমান শ্রীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ গোপালনগর গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী এবং তিনি দুই সন্তানের জননী। পরে ওই গৃহবধূকে পার্শ্ববর্তী তারা পুষ্করুণী গ্রামের অভিযুক্ত বিল্লাল মিয়ার সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর সঙ্গে বিল্লাল মিয়ার অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে গত ১৬ অক্টোবর রাতে তাদেরকে হাতেনাতে আটক করেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে মেম্বার বজলুর রহমান সেখানে উপস্থিত হন এবং ওই নারীকে লাঠিপেটা করেন। এর পরদিন, অর্থাৎ ১৭ অক্টোবর সকালে ইউপি সদস্য বজলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সালিশ বৈঠক বসে। সেই সালিশের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ওই নারীকে বিল্লাল মিয়ার সঙ্গে ৫ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে দেওয়া হয়। তবে জানা গেছে, অভিযুক্ত বিল্লাল মিয়াও বিবাহিত এবং তার সংসারে স্ত্রী ও চারটি মেয়ে রয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বলেন, “ওই মহিলা আমার ভাতিজার স্ত্রী। পার্শ্ববর্তী তারা পুষ্করুণী গ্রামের যুবক বিল্লাল মিয়ার সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক অনেক দিন ধরে। গত ১৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে স্থানীয় গ্রামবাসী তাদেরকে অনৈতিক কাজে হাতেনাতে আটক করে আমাকে খবর দেন। আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই নারীকে কয়েকটি আঘাত করি। পর দিন (১৭ অক্টোবর, শুক্রবার) স্থানীয় লোকজনসহ সালিশ করে তাদেরকে ৫ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে দেওয়া হয়।”

এই নারী নির্যাতন ও জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “ইউপি সদস্য কর্তৃক প্রবাসীর স্ত্রীকে নির্যাতনের একটি ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। সতত্য যাচাই করে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরও পড়ুন