বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

কুমিল্লার চান্দিনায় সৎ মাকে হত্যা, অতঃপর…

ওসমান গনি, চান্দিনা প্রতিনিধি:

Rising Cumilla -Shaheen Munshi kills stepmother and escapes Chandina stirs up panic
কুমিল্লার চান্দিনায় সৎ মাকে হত্যা, অতঃপর.../ছবি: প্রতিনিধি

কুমিল্লার চান্দিনায় এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জেরে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাবার দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে না পারায় সৎ মা হালিমা খাতুন (৩৪)-কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে শাহিন মুন্সির বিরুদ্ধে।

গতকাল বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাত সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়নের সব্দলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত হালিমা খাতুন (৩৪) সব্দলপুর গ্রামের এমদাদুল হক মুন্সির (৭৫) দ্বিতীয় স্ত্রী। গতকাল বুধবার গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত শাহিন মুন্সি মৃতার সৎ ছেলে এবং এমদাদুল হক মুন্সির চতুর্থ ছেলে। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এমদাদুল হক মুন্সির প্রথম স্ত্রী মারা যান প্রায় তিন বছর আগে। তার চার ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।

যারা সবাই বিবাহিত এবং চার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী। ছোট ছেলে শাহিন মুন্সি প্রায় আট মাস আগে দেশে ফেরেন। দুই মাস আগে এমদাদুল হক মুন্সি দাউদকান্দি উপজেলার জয়নগর গ্রামের হালিমা খাতুনকে বিয়ে করেন।

এমদাদুল হক মুন্সি বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে আমি শৌচাগারে যাই।

তখন আমার স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন, পাশের কক্ষে ছোট ছেলে শাহিন ছিল। ঘরে ফিরে দেখি স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় কাতরাচ্ছেন। চিৎকার দিলে পুত্রবধূসহ আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে অ্যাম্বুল্যান্সে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তৃতীয় পুত্রবধূ শিরিনা আক্তার বলেন, ‘আমরা অন্য ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। শ্বশুরের চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখি শাহিন ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছে, শ্বশুর কান্নাকাটি করছেন। সৎ শাশুড়ি তখন রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিলেন।’

বাতাঘাসী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘এমদাদুল হক মুন্সি আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। দ্বিতীয় বিয়েতে পরিবারের কারোর আপত্তি ছিল না। কী কারণে শাহিন সৎ মাকে হত্যা করেছে, তা কেউ বলতে পারছে না। ঘটনার পর সে পালিয়ে যায়।’

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃতার মরদেহ ঢাকা থেকে ফেরত আনার পর পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম জানান, মৃতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার স্বামী এমদাদুল হক মুন্সি বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শাহিন মুন্সির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

আরও পড়ুন