মে ৪, ২০২৫

রবিবার ৪ মে, ২০২৫

কুমিল্লার চান্দিনায় ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

Rising Cumilla - Allegations of irregularities in the distribution of fair-priced goods in Chandina, Cumilla
ছবি: প্রতিনিধি

কুমিল্লা চান্দিনা ৩নং মাধাইয়া ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ড কাশিমপুরে ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রদান করছেন এবং অর্ধ শতাধিক উপকারভোগী বিক্ষোভোও করেছেন ।

উপকার ভোগীদেরকে চাউল না দিয়ে ট্যাগ অফিসারের সাথে আতাত করে কালোবাজারীর কাছে চাউল বিক্রি করে দিয়েছে ডিলার কে এম জামাল হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৬ তারিখ উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের কাশিমপুর ন্যায্যমূল্যর পণ্য বিতরণ করা হয়েছে। সেখানে ৪৫০ টাকার বিনিময়ে ৩০কেজি করে চাউল দেয়া হয়েছে। তবে অভিযোগকারীরা উল্লেখ করেছেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ডিলার পণ্য বিতরণ করার খবর কাউকে জানায়নি, না জানিয়েই তিনি পণ্য বিতরণ করেছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পণ্য বিতরণের কথা থাকলেও সেদিন যোহরের নামাজের পর থেকে আছরের নামাজের পর পর্যন্ত খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই পণ্য বিতরণ করা হয়েছে। এরপর পণ্য বিতরণ বন্ধ করা হয়েছে।

এতে এ ইউনিয়নের অর্ধ শতাধিক উপকারভোগী গরীব অসহায় ন্যায্যমূল্যে পণ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পরের দিন সকালে অর্ধশতাধিক উপকারভোগী বিক্রয় কেন্দ্রে ডিলার কে এম জামাল হোসেন এর কাছে যান। না পেয়ে ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারের নিকট দেখা করতে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিসে যান। তখন এক কর্মকর্তা বলেন এ বিষয়ে আমরা জানিনা ডিলার সাহেব জানেন। পণ্য বিতরণের দিন ন্যায্যমূল্যের মূল ডিলার উপস্থিতিতে তার প্রতিনিধি দিয়ে চাল বিতরন করেছেন । এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসারও। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার কে এম জামাল হোসেনের প্রতিনিধি শুধুমাত্র ৩০ কেজি চাউল কয়েকজন উপকারভোগীর মধ্যে বিতরণ করে বাকি চাউলের বস্তা কালোবাজারে বিক্রি করেছেন।

উপকারভোগী মাধাইয়া গ্রামের বশির মিয়ার স্ত্রী রেজিয়া বেগম (৫০) বলেন, বাজারে ৬০ টাকা কেজি চাউল কিনে খেতে হয়। সেখানে ন্যায্যমূল্যর ১৫ টাকা কেজি চাল কিনে কয়েকদিন খেয়ে পেটের খিদাটা নিবারণ করতাম। কোনদিকে কখন যে ন্যায্যমূল্যের মাল দিয়ে গেছে, তার কোনও খবরই পেলাম না। পরে শুনলাম যুহরের নামাজের পর থেকে দেওয়া শুরু করে আছরের নামাজের পর পর্যন্ত চাল দিয়ে শেষ করেছে। ন্যায্যমূল্যের কম দামের চাউল দিয়ে সারা মাস চলতাম, এখন শুনছি চাউল আর দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে আমরা এখন কি খেয়ে বাঁচব?

অভিযুক্ত কে এম জামাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন আমি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নতুন ডিলার এ ডিলার নিয়ছি সম্মানের জন্য এই চাউল বিক্রি করে খাওয়ার জন্য না আমি সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত চাউল দেই দেওয়ার পর যে চউল গুলো ছিল এগুলো উপস্থিত গরীবদের মাঝে বিতরন করে দেই। বিতরনের পরের দিন আমি শুনছি একটা অভিযোগ হইছে তার পর আমি ইউ এন ও ম্যাডামের সাথে কথা বলেছি ম্যাডাম আমি নতুন ডিলার আমার ভূলত্রুটি থাকতে পারে তবে পরবর্তীতে আর এমন ভুল হবেনা আমি চেষ্টা করব যাতে সকল কাটধারী উপকার ভোগী সদস্যরা চাউল পায়, তবে গত ১৬ তারিখ যারা চাউল পায়নাই তাদের প্রত্যেকের জন্য আমি চাউল তাদের বাড়ীতে পাঠাই দিছি। পরবর্তীতে আমি নিজে উপস্থিত থেকে ন্যায্যমূল্য উপকার ভোগীদের মাঝে চাউল বিতরণ করব । সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার মো সালাউদ্দিন সাহেব এর নিকট যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্বব হয়নি তাই তার বক্তব্য নিতে পারিনি।

৩ নং মাধাইয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন বলেন,ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিতরণ বিষয়ে ডিলার বা তার প্রতিনিধি আমার সাথে কোনও যোগাযোগ করেননি। অনিয়মের বিষয়ে আমার মেম্বার সহ দুইএকজন উপকারভোগীদের কাছ থেকে শুনেছি আমার নিকট কোন লিখিত অভিযোগ হয়নি। আমি শুনেছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট কে বা কারা যেন একটি লিখিত অভিযোগ করেছে।তবে অনিয়মের বিষয়টি সত্যি।

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া হোসেন জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ হাতে পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ন্যায্যমূল্যের ডিলার যে হউক তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।তবে ট্যাগ অফিসারের নিকট আমি কথা বলেছি তিনি জানান আমি কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি দিতে পারিনা তবে পরবর্তীতে ন্যায্যমূল্যের চাউল নিয়ম মাফিক দিবে বলে আমাকে জানায়। মেসার্স জামাল এন্টারপ্রাইজ এর সত্বাধিকারী ডিলার কে এম জামালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

 

আরও পড়ুন