কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- উপজেলার গজারিয়া গ্রামের মো: জাকারিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী বাপ্পী।
আজ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন। মামলার বিশেষ পিপি প্রদীপ কুমার দত্ত গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীকে খোঁজ করে না পেয়ে মাইকে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। পরদিন আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পী (২৪) নিজেই অটোরিকশা নিয়ে মাইক ভাড়া করে এলাকায় প্রচার শুরু করেন।
এতে নিহতের পরিবারের সন্দেহ হয় এবং বাপ্পীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনো তথ্য না পেয়ে পরে ছেড়ে দেন। পরে ১৬ মার্চ সকালে ডাকাতিয়া নদীতে ছাত্রীর মৃতদেহ কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং মোহাম্মদ আলী বাপ্পীকে আটক করে।
আটকের পর সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জানায়, “তেঁতুল খাওয়ানো কথা বলে তাঁর ঘরে নিয়ে মুখে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ কাঁথা দিয়ে পেঁচিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দেয়। এ ব্যাপারে ১৬ মার্চ নিহতের বাবা বাদী হয়ে মোহাম্মদ আলী বাপ্পীকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।”
আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ২ জুন আসামি মোহাম্মদ আলী বাপ্পীসহ একই গ্রামের মো. মিজানকে (২২) জড়িত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ কুমার দত্ত জানান, ‘মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বাপ্পীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। অপর আসামি মো. মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।’