
কুমিল্লার দেবীদ্বারে প্রকাশ্য দিবালোকে স্বর্ণের দোকান থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার বিক্রি করতে গিয়ে ইপিজেড এলাকায় এক দম্পতি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। আটককৃতরা হলো স্বামী মো. করিম প্রকাশ আবু তাহের (৩০) এবং তার স্ত্রী শারমিন আক্তার (২৫)। রবিবার দুপুরে দেবীদ্বার থানা পুলিশ তাদের কুমিল্লা কোর্ট হাজতে প্রেরণ করে।
আটক করিম কুমিল্লা কোতয়ালী থানার শুভপুর গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহর ছেলে এবং শারমিন তার স্ত্রী।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় দেবীদ্বার নিউমার্কেট কলেজ রোডের ‘বারেক প্লাজা’র পূর্ব গলিতে অবস্থিত ‘খাদিজা শিল্পালয়’-এ চুরির ঘটনা ঘটে। দোকানের মালিক মো. জাকির হোসেন নামাজ শেষে দোকান খুলতে গিয়ে দেখেন তালা ভাঙা এবং ভেতরের সুকেস খালি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, অজ্ঞাত ৫-৬ জনের একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র সুকেসের তালা ভেঙে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার সন্ধ্যায়। কুমিল্লা ইপিজেডে জাকির হোসেনের ভায়রা ভাই স্বর্ণের দোকান মালিক সাজ্জাদ হোসেনের কাছে করিম ও শারমিন কিছু গহনা বিক্রি করতে গেলে তার সন্দেহ হয়। কারণ, ওইদিনই দেবীদ্বারের স্বর্ণ চুরির ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিক্রি করতে আসা গহনার মধ্যে ‘খাদিজা শিল্পালয়’-এর সংক্ষিপ্ত নাম ‘কেএস’ খোদাই করা ছিল। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সাজ্জাদ তাৎক্ষণিকভাবে জাকিরকে ফোন করে জানান।
পরে পুলিশ নিয়ে ওইদিন রাতেই প্রায় দেড় ভরি স্বর্ণালংকারসহ ওই দম্পতিকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আটক করিম ও শারমিন জানায়, মুরাদনগর উপজেলার আবুল কাসেম (৩৫) নামে এক ব্যক্তি তাদের এই স্বর্ণালংকারগুলো বিক্রি করে দিতে বলেছিল। সেই সূত্রেই তারা বিক্রি করতে এসে ধরা পড়ে।
তদন্তে আরও জানা যায়, স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের অন্যতম সদস্য আবুল কাসেমের সাথে করিমের পরিচয় হয় অনলাইন ক্যাসিনো এবং জুয়া খেলার মাধ্যমে। করিমই কাসেমকে অনলাইনে জুয়া খেলায় যুক্ত করে।
এ বিষয়ে ‘খাদিজা শিল্পালয়’-এর মালিক মোঃ জাকির হোসেন জানান, জুম্মার নামাজের সময় দোকান বন্ধ করে যাওয়ার পর ফিরে এসে দেখেন তালা কাটা এবং প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়ে গেছে। সন্ধ্যায় ইপিজেড থেকে তার আত্মীয় সাজ্জাদ ফোন করে চোরাই স্বর্ণসহ ওই দম্পতিকে আটকের খবর দেন।
এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, আটক দম্পতিকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আজ তাদের কোর্টে চালান করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে।