আসন্ন ঈদ-উল-আজহায় কুমিল্লায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৪৯২টি। এর বিপরীতে জেলায় পশুর মজুত রয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৮টি। সে হিসেবে জেলায় কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে ৮ হাজারের বেশি পশু। এবারের ঈদের জন্য স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে ৭৫টি। অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৩১০টি।
কুমিল্লা বিভিন্ন খামারে এসব পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এখন পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুমিল্লার খামারিরা। খামারিরা বলছেন এবার জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পশু রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার দুই লক্ষ বিশ হাজার চারশত বিরানব্বই টি পশু কোরবানির চাহিদা রয়েছে। তার বিপরীতে এবার পশু রয়েছে দুই লক্ষ উনত্রিশ হাজার আটানব্বইটি।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় কোরবানির জন্য যে পরিমাণ পশু রয়েছে তাতে চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৮ হাজারের অধিক পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।
জেলা প্রশাসন তথ্যমতে, কুমিল্লায় স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে ৭৫টি। কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৩১০টি। তবে অস্থায়ী হাটের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জেলার সদর উপজেলার খামারি নাদিম হোসেন বলেন, আমরা গরুকে কোনো প্রকারের রাসায়নিক খাদ্য দিচ্ছি না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক দানাদার খাবার, ঘাস এসবই খাওয়ানো হচ্ছে। জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি এলাকার অপর খামারি ময়নাল হোসেন বলেন, আমার খামারে এ মুহূর্তে দেশি, শাহীওয়াল, ফিজিয়ান, ফিজিয়ান ক্রস জাতের গরু রয়েছে।
জেলার দাউদকান্দি উপজেলার বাশখোলা এলাকার খামারি গোলাম রসুল বলেন, আমার খামারে ১‘শ এর অধিক বিক্রি উপযোগী গরু রয়েছে, যা আমি এবারের ঈদে বিক্রি করবো। ১ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা মূল্য পর্যন্ত গরু রয়েছে। খড়, খৈল, গমের ভূষি, কাচা ঘাস ও নালী খাবার দিয়ে এসব গরু মোটা-তাজা করা হচ্ছে। এসব গরু ঈদ হাটে বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে পশু কোরবানিতে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগও নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর কুমিল্লার কর্মকর্তারা জানান, এবার সঠিক পদ্ধতিতে পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো সংরক্ষণ বিষয়ে ৪৪৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাজার গুলোতে রাখা হচ্ছে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম। এছাড়াও মনিটরিং করা হচ্ছে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণের সাথে জড়িত খামারিদেরও।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদকে ঘিরে এবছর আমাদের পর্যাপ্ত পশু মজুদ রয়েছে। উদ্বৃত্তও থাকবে। আমাদের এবার প্রায় ৬৭ টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম বিভিন্ন উপজেলার হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাকে চাহিদমত সেবা দিয়ে যাচ্ছে।