জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলীর দেওয়া একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের ভোটে নৌকার প্রার্থী রাজী মোহাম্মদ ফখরুলকে ‘মেকানিজম’ করে হারানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গতকাল শনিবার (৩০ মার্চ) বিকালে রোশন আলী মাস্টার ওমরা হজ্ব পালনের উদ্দ্যেশে মক্কায় গমণ উপলক্ষে দেবিদ্বার পৌর এলাকার তার নিজ বাসভবনে একটি ইফতার মাহফিলে ওই বিতর্কিত বক্তব্য রাখেন তিনি। অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলও উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের একপর্যায়ে রোশন আলী বলেন, “ভোটে আমরা হারিনি। ম্যাকানিজম করে হারানো হইছে। যেকোন কারণে আমরা রেজাল্ট নিতে পারেনি। ৮২ হাজার ভোট কি কম? এগুলোর অনেক ইতিহাস, এগুলো আপনারা বুঝবেন না। আপনাদের ভাইঙ্গা বুঝাইতে অইব। যাদেরকে আমি নেতা বানাইছি তারা আমারে এখন চেট (আঞ্চলিক গালি) দিয়াও গুণে না।”
এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দ্যেশ্য করে বলেন, ‘আমাদের দলে অনেক মীর জাফর আছে। এগুলো যুগ যুগ ছিল থাকবে। তারা যদি ভালো হয়ে যায় আমরাও ভালো হয়ে যাবো। আর হজ্ব করার পর যদি দেখি ভালো না হইছে তাহলে মাঠে নাইম্যা পড়বো।’
তবে রাজী ফখরুলের হেরে যাওয়াকে উদ্দেশ্য করে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এ নেতার বিতর্কিত বক্তব্যে তাৎক্ষনিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
রোশন আলী আগেও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন। ২০২১ সালে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে তাঁর একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। সেখানে ‘যারা নৌকা করে, তারা সব রাজাকারের বাচ্চা’ বলে তাঁকে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল। ওই বক্তব্যের পর স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর পদত্যাগের দাবিতে ঝাড়ুমিছিল করেছিলেন।
দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর বলেন, তাঁর (রোশন আলী) এসব কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামী লীগ হাস্যরসে পরিণত হচ্ছে। তাঁকে কেউ থামাতে পারছেন না। আগেও বিভিন্ন সভায় নেতা-কর্মীদের গালিগালাজ করে বক্তব্য রেখে বিতর্কিত হয়েছেন, যা সবাই দেখেছেন ও শুনেছেন। তাঁর কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও বিব্রত। আসলে তিনি মাইক হাতে পেলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
এ বিষয়ে রোশন আলী মাস্টার বলেন, ‘আমি বক্তব্য রেখেছি। সেটা ভাইরাল হলো কি না, জানি না। আমি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বলেছি, গত নির্বাচনে নৌকা ৮২ হাজার ভোট পাইছে, এটা কম না।’