দীর্ঘ শোষণ বঞ্চনার নাগপাশ থেকে মুক্তির তাড়নায় ছিনিয়ে আনা নির্মল সবুজ একটি ভূখণ্ড যার নাম বাংলাদেশ। শত চড়াই উতরাই পেরিয়ে আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজ, আবদুল কাইয়ুমসহ অসংখ্য শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বেরাচার শেখ হাসিনাকে হটিয়ে আমরা পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ।
আমাদের নতুন বাংলাদেশে আর কারো তাঁবেদারি থাকবে না। গড়ে ওঠবে বৈষম্যহীন সুদৃঢ় ঐক্যের বাংলাদেশ। থাকবেনা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন। বিচারের নামে অবিচার চলবেনা।
থাকবে অর্থনৈতিক সুদৃঢ় ভিত্তি। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে আমরাও এগিয়ে যাবো সমভাবে। সুসম্পর্ক থাকবে প্রতিবেশী দেশের সাথে, আমাদের কোনো বন্ধু অবয়বে শত্রু থাকবে না, এদেশের থাকবেনা খবরদারি; থাকবে শুধু বন্ধুত্ব ও পরস্পরের সহযোগিতার সম্পর্ক। মেধাবী ও সাহসী তরুণদের নিয়ে মাথা উঁচু করে বিশ্বদরবারে স্থান করে নিবে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ।
হিটলার খ্যাত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সালতানাত ধ্বংস করে দিয়ে বাংলাদেশের তারুণ্য এক ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করেছে। যেখানে আমাদের নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের তরুণদের রয়েছে হাজারো স্বপ্ন এবং পরিকল্পনা।
তাই কুমিল্লা ডিবেট ফেডারেশন কুমিল্লার সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, পলিটেকনিক, মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের নিয়ে আজ ৯ আগস্ট, ২০২৪ কুমিল্লা টাউন হল ময়দানে আয়োজন করেছে “তারুণ্যের চোখে নতুন বাংলাদেশ”। উক্ত অনুষ্ঠানে কুমিল্লার তারুণ্যের চমৎকার কিছু প্রস্তাব ওঠে এসেছে। উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানটি বিকাল ৪ টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা ৬ টায়।
কুমিল্লার তারুণ্যের চোখে কেমন হবে তাদের নতুন বাংলাদেশ সেসব বিষয়ে চমৎকার কিছু প্রস্তাব :
১. ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নির্মূল করতে যে গণহত্যা চালিয়েছে তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
২. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
৪. অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৫. নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৬. যুগোপযোগী শিক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে।
৭. মেধাভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।
৮. বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে।
৯. বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।
১০. সরকারীভাবে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. বাজার ব্যবস্থায় সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
১২. সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. দুর্নীতি চিরতরে নির্মল করতে হবে।
১৪. সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী দু’বারের বেশি ক্ষমতায় যেতে পারবে না সেটা নিশ্চিত করতে। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা চালু করতে হবে।
এছাড়াও অসংখ্য প্রস্তাব কুমিল্লার তারুণ্য থেকে ওঠে এসেছে যেগুলো সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানটির আয়োজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কুমিল্লা ডিবেট ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি কাজী নাজমুল আহসান ; সাবেক সভাপতি, আইনের শিক্ষক ও আইনজীবী মোঃ শামীম আহমেদ; সাবেক অর্গানাইজিং সেক্রেটারি হোসাইন প্রান্ত, বর্তমান সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ তারেক ; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মারুফ হাসান ; বিতর্ক সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান ; অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মুসাব্বির আহমেদ জিসান, নির্বাহী সম্পাদক তামিম মুনতাসীর সহ আরো অনেকে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কুমিল্লা ডিবেট ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ মারুফ হাসান।