শুক্রবার ২১ নভেম্বর, ২০২৫

কুমিল্লা টাউন হলে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি প্রশাসন, নিরাপত্তা জোরদার

রাইজিং কুমিল্লা অনলাইন

কুমিল্লা টাউন হলে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি প্রশাসন, নিরাপত্তা জোরদার

কুমিল্লা টাউন হল মাঠে আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিএনপির দুটি বিবদমান গ্রুপ কর্তৃক পৃথক রাজনৈতিক কর্মসূচির ডাক দেওয়ায় জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

এদিকে গতকাল রাত থেকেই কুমিল্লা টাউন হল মাঠ নিয়ন্ত্রণে নেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকালে গিয়ে দেখা যায়, গেইটে তালা দেওয়া এবং যৌথবাহিনীর টহল আরও বাড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে জেলা প্রশাসনের জে এম শাখা থেকে দুটি আলাদা চিঠিতে বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিন গ্রুপ ও মনিরুল হক চৌধুরী গ্রুপকে স্পষ্টভাবে জানানো হয় যে, ২০ নভেম্বর টাউন হল মাঠে কোনো ধরনের রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।

বিএনপির একাধিক অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে জানা যায়, টাউন হল মাঠে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রোগমুক্তি কামনায় আজ দোয়া ও আলোচনা সভার কর্মসূচি নিয়েছিল আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ। একই দিনে ও একই স্থানে মনিরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ পূর্বনির্ধারিত একটি নির্বাচনী জনসভা আয়োজন করতে চেয়েছিল। একই মাঠে একই দিনে দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা, অস্বস্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

দুই পক্ষের কাছে পাঠানো পৃথক চিঠিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির জোর আশঙ্কা তুলে ধরেছে জেলা প্রশাসন। টাউন হল মাঠের পরিবর্তে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিকল্প স্থান খুঁজে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় চিঠিতে।

চিঠি দুটিতে স্বাক্ষর করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী। প্রথম চিঠিটি আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম রায়হানকে এবং দ্বিতীয় চিঠিটি মনিরুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত আইনজীবী ও মাঠ বরাদ্দের আবেদনকারী আবদুল মোতালেব মজুমদারকে পাঠানো হয়।

চিঠি ইস্যুর পরপরই গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল মালিক টাউন হল মাঠে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে উপস্থিত উভয় পক্ষের নেতাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, টাউন হল মাঠে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, ‘অন্য কোথাও আয়োজন করলে বাধা নেই, কিন্তু টাউন হল মাঠে সমাবেশের অনুমতি নেই।’

এই নির্দেশের পরপরই টাউন হল মাঠে দুই পক্ষের সমাবেশের প্রস্তুতিমূলক কাজ বন্ধ হয়ে যায়। প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে মাঠটিকে তাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেয়। সম্ভাব্য উত্তেজনা এড়াতে মাঠজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় টাউন হলে গিয়ে দেখা যায় উত্তেজনাপূর্ণ চিত্র। মাঠের পূর্ব পাশে হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন গ্রুপ তাদের দোয়া ও আলোচনা সভার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। একই সময়ে পশ্চিম পাশে মনিরুল হক চৌধুরী গ্রুপ তাদের নির্বাচনী জনসভার জন্য মঞ্চ তৈরিতে ব্যস্ত ছিল। একই মাঠে দুই গ্রুপের সমান্তরাল প্রস্তুতি এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ‘একই স্থানে দুইটি পক্ষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে কাউকে অনুমিত দেওয়া হবে না।’

আরও পড়ুন