মার্চ ১২, ২০২৫

বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

এখন দেশেই তৈরি হবে গরুর লাম্পি স্কিন টিকা, খরচ ৭০ টাকা

Rising Cumilla - Lumpy skin disease
গরুর লাম্পি স্কিন প্রতীকি ছবি/সংগৃহীত

গরু ও মহিষের মধ্যে লাম্পি স্কিন ডিজিজ নামক এক ভয়াবহ রোগ দেখা যায়। এই রোগে পশুর চামড়ায় ফোসকা পড়ে যায়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে এই রোগ শনাক্ত হওয়ার পর এটি মহামারীর আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় এর কোনো চিকিৎসা নেই, শুধু টিকাই এর একমাত্র সমাধান।

এতদিন বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করতে হতো, যাতে প্রতি ডোজের জন্য ২৫০-৩০০ টাকা খরচ হতো। তবে সুখবর হলো, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এখন দেশেই এই রোগের টিকা আবিষ্কার করেছে। এই টিকা তৈরিতে খরচ হবে মাত্র ৭০ টাকা।

গতকাল মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বিএলআরআই বাস্তবায়িত ‘জুনোসিস ও আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা’ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উদ্ভাবিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভ্যাকসিন সিড হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

ফরিদা আখতার বলেন, ‘দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতে এ টিকা রপ্তানি করা হবে। লাম্পি স্কিন ডিজিসের (এলএসডি) বিষয়ে খামারিদের সচেতন করার পাশাপাশি প্রতিষেধক উৎপাদনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গবাদি পশুর এ রোগে কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা দ্রুত নিরূপণ করতে হবে।’

তিনি গবেষণা ও পরীক্ষাগারগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন রোগ-জীবাণুর আক্রমণ বাড়ছে। এজন্য সরকার বিজ্ঞানীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত। আক্রান্ত গরুর মাংস খেলে মানুষের কোনো ক্ষতি হবে কিনা তা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের জানতে হবে এবং এলএসডি রোগের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যেতে হবে।’বক্তারা বলেন, প্রতি বছর লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রাণিসম্পদ খাতের মারাত্মক আর্থিক ও বাণিজ্যিক ক্ষতি সাধন করছে।

এছাড়া বিদেশী টিকা আমদানি করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও বাজারেও তা অপ্রতুল। এ রোগে প্রতি গরুতে গড়ে ১২ হাজার টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে। ৫-১০ শতাংশ মৃত্যুহার হওয়ার পাশাপাশি পশুর ওজন কমে গিয়ে দুধ উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। দেশের ৩০ শতাংশ বা প্রায় ১০ কোটি গরু-মহিষ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এতে প্রান্তিক খামারিরা লোকসানের মুখে পড়ছেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমেনা বেগম, এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।