শীত আসলেই বাঙালির কাছে খেজুর গুড়ের মিষ্টি গন্ধ এবং স্বাদের সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক। শীতের সকালে তাজা খেজুরের রস পান করার আনন্দ এবং তার থেকে তৈরি গুড়ের স্বাদ যেন এক বিশেষ অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় শীতকালে খেজুর গুড় তৈরির ঐতিহ্য বহু বছর ধরে চলে আসছে, তার মধ্যে যশোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা এবং মাগুরা বিশেষভাবে পরিচিত।
কেন ঘুরে আসবেন খেজুর গুড়ের দেশে?
খুব সকালে খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহ করা তাজা রস পান করার অভিজ্ঞতা অন্য রকম। গাছিরা বিশেষ কায়দায় গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন এবং তা সরাসরি পান করলে শীতের সকাল হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করার পুরো প্রক্রিয়া দেখতে পাওয়া একটি শীতকালীন আকর্ষণ। গাছিরা বড় হাঁড়িতে রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন। সেই সুগন্ধে পুরো এলাকা মেতে ওঠে।
খেজুরের গুড় বিভিন্ন প্রকারে পাওয়া যায়, যেমন পাটালি গুড়, নলেন গুড়, এবং ঝোলা গুড়। প্রতিটির স্বাদ এবং গন্ধ ভিন্ন যা একবার চেখে দেখার মতো।
শীতকালে খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মিষ্টি যেমন পিঠা-পুলি, পায়েস, ও মিষ্টান্নের অন্যান্য আইটেম খাওয়ার মজাই আলাদা। এ অঞ্চলে গিয়ে স্থানীয় মিষ্টির দোকান থেকে এসব খাবার উপভোগ করতে পারেন।
কখন যাবেন? ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যবর্তী সময় হলো খেজুর গুড়ের মৌসুম। এই সময়ে বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় গেলে খেজুর রস সংগ্রহের দৃশ্য দেখা এবং তাজা গুড় খাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।
কীভাবে যাবেন? ঢাকা থেকে সরাসরি বাস, ট্রেন বা ব্যক্তিগত গাড়ি করে যশোর, কুষ্টিয়া, বা রাজশাহীর উদ্দেশ্যে যাওয়া যায়। প্রতিটি এলাকাতেই স্থানীয়ভাবে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজ করেন।
শীতে খেজুর গুড়ের দেশের এই ভ্রমণ একদিকে যেমন মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের মাঝে মিশে যাওয়ার সুযোগ, অন্যদিকে বাঙালির ঐতিহ্য এবং খাবারের প্রতি ভালোবাসার এক বিশেষ অভিজ্ঞতা।