
রমজান মাসে ইফতারের একটি অপরিহার্য অংশ হলো মুড়ি মাখা। এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্নভাবে তৈরি করা হয়। তবে, সম্প্রতি মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশানো নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোচনা চলছে। কেউ এর পক্ষে, আবার কেউ এর বিপক্ষে।
পক্ষে যারা:
- অনেকের মতে, মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশালে এর স্বাদ আরও বাড়ে। জিলাপির মিষ্টি রস মুড়ির সাথে মিশে একটি অনন্য স্বাদ তৈরি করে।
- বিশেষ করে শিশুরা এই মিশ্রণটি খুব পছন্দ করে।
- কেউ কেউ মনে করেন, এটি একটি নতুন খাদ্য সংস্কৃতি, যা রমজানের ইফতারকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলে।
বিপক্ষে যারা:
- অনেকের মতে, মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশালে এর মূল স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
- তারা মনে করেন, এটি একটি অস্বাস্থ্যকর মিশ্রণ, যা হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- ঐতিহ্যগতভাবে, মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশানোর প্রচলন নেই। তাই, এটি একটি অপ্রয়োজনীয় সংযোজন বলে মনে করেন অনেকে।
- অনেকের মতে, মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশানো একটি মিশ্র সংস্কৃতি।
বিভিন্ন অঞ্চলের ভিন্নতা:
বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের ভিন্নতার কারণে এই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যেমন, কিছু অঞ্চলে মুড়ি মাখার সাথে জিলাপি মেশানোর প্রচলন থাকলেও, অন্যান্য অঞ্চলে এটি একেবারেই অপরিচিত।
নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁদের বেশির ভাগই মুড়িমাখায় জিলাপি পছন্দ করেন না। এই অঞ্চলের তরুণী কণা ফাতিমা বলেন, ‘ঝাল খাবারের একরকম স্বাদ, মিষ্টি খাবারের অন্য রকম। দুটিকে মিলিয়ে জগাখিচুড়ি পাকানোর মানেই হয় না।’
চট্টগ্রাম শহরের জিহাদ বললেন, ‘ছোলা-মুড়ি এমন এক যুগল, যার মধ্যে জিলাপি দেওয়া মানে তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি। ছোলা–মুড়ি চট্টগ্রামেরও ঐতিহ্যবাহী ইফতারি। তবে এই খাবারে জিলাপি মেশালে ঝাল-মিষ্টি মিলিয়ে খুব অদ্ভুত এক স্বাদ তৈরি করে। তখন খাবারগুলোর নিজস্ব স্বাদ আর পাওয়া যায় না।’
বিশেষজ্ঞদের মতামত:
পুষ্টিবিদদের মতে, মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশানো একটি উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার। তাই, এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। ছোলা ও মুড়ি আলাদা আলাদা বা একসঙ্গে খেলে বেশ উপকার; কিন্তু ছোলা–মুড়ির সঙ্গে জিলাপি ও বিভিন্ন রকমের তেলে ভাজা চপ মেশানো খুব একটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। মুখরোচক হলেও ঝাল খাবারের সঙ্গে মিষ্টি জিলাপি খেলে অ্যাসিডিটিসহ নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে।
উপসংহার:
মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশানো একটি ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। এর পক্ষে বা বিপক্ষে অনেক যুক্তি রয়েছে। তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়া।