ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪

সোমবার ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪

অবশেষে ৪৫০ দিন পর কারামুক্ত হলেন খাদিজা

khadijatul kubra
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। ছবি: সংগৃহীত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা দুটি পৃথক মামলায় জামিন পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। তার জামিনের পর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে র্দীঘ প্রায় ১৫ মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন তিনি। তার জামিনের আদেশ রোববার সন্ধ্যার দিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়।

কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার মো. শাহজাহান মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, জামিনের কাগজপত্র কারাগারে আসার পর তা যাচাই-বাছাই করা হয়। সোমবার ভোরে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কিন্তু পরিবারের কোনো স্বজন না আসায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছিলেন না। পরে তার বোন আসলে সকাল ৯টার দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এর আগে খাদিজাতুল কোবরাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের ওপর চেম্বার আদালত যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন পরে তা আপিল বিভাগ বাতিল করেন। একইসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষ জামিন বাতিল চেয়ে যে আপিল করেছিলেন তাও খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে তার হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকে। এই আদেশের ফলে খাদিজার মুক্তিতে আর বাধা ছিল না।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ খাদিজার মামলার বিষয়ে আদেশ দেন। আদালতে খাদিজার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট বি এম ইলিয়াস কচি ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুল আলম।

এর আগে গত ১০ জুলাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় জগন্নাথের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরার জামিন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি করেছিলেন আপিল বিভাগ। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজাতুল কোবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ।

নিউমার্কেট থানার মামলায় এসআই খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের সময় মোবাইলফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও–সংবলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।

নিউমার্কেট থানায় মামলা করার আট দিনের মাথায় কলাবাগান থানায় আরেকটি মামলা করেন এসআই আরিফ হোসেন। কলাবাগান থানার মামলার এজাহারেও উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর রাত ৯টা ১৫ মিনিটে মোবাইলফোনে ইউটিউব দেখার সময় দেলোয়ার হোসেনের ইউটিউব চ্যানেল দেখতে পান। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি থানায় মামলা করেন। অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।