
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট মহলে আবারও নেমে এল শোকের ছায়া। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের ব্যাটসম্যান ফিলিপ হিউজের মৃত্যুর সেই বিভীষিকা যেন ফিরে এলো। এবার ক্রিকেট বলের আঘাতে মাত্র ১৭ বছর বয়সী এক প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার বেন অস্টিন মারা গেছেন।
গত মঙ্গলবার মেলবোর্নের ফের্নট্রি গালি ক্রিকেট ক্লাবে অনুশীলনের সময় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। বেন অস্টিনকে তখন হাতে ব্যবহৃত সাইডআর্ম থ্রোয়ারের (ওয়ানগার) মাধ্যমে বোলিং করা হচ্ছিল। বার্তা সংস্থা এএফপির খবর অনুসারে, মেলবোর্নে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নামার আগে নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করতে নেমেছিলেন অস্টিন।
এ সময় থ্রোয়ার থেকে ছোড়া বলটি তাঁর ঘাড়ে আঘাত করে। আঘাতের সময় অস্টিন হেলমেট পরা থাকলেও ‘নেক গার্ড’ ছিল না। গুরুতর আহত অবস্থায় বেনকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবশেষে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে এই কিশোর ক্রিকেটারের মৃত্যু হয়।
বেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ফের্নট্রি গালি ক্রিকেট ক্লাব। এক বিবৃতিতে ক্লাব জানিয়েছে- “বেনের মৃত্যুতে আমরা ভীষণভাবে মর্মাহত। ওর মৃত্যু আমাদের পুরো ক্রিকেট সম্প্রদায়ের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে।”
ফের্নট্রি গালি অ্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আর্নি ওয়াল্টার্স বলেন- “বেন স্থানীয় ক্রিকেটে যেমন মেধাবী ছিল, তেমনি সবার প্রিয়। আমি জানি, এ খবর আমাদের সম্প্রদায়ের ওপর কতটা গভীর প্রভাব ফেলবে।”
বেনের ক্লাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত সবার প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষার অনুরোধ করে। ক্লাবটি বেনের পরিবারের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভিক্টোরিয়া, পুলিশ ও হাসপাতালের কর্মীদের প্রতি ধন্যবাদও জ্ঞাপন করেছে।
বাবার জেস অস্টিন এক বিবৃতিতে তাঁর হৃদয় ভাঙা অনুভূতির কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন “আমরা আমাদের সুন্দর বেনকে হারিয়ে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছি, যে বৃহষ্পতিবার সকালে মারা গেছে। এ মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের কাছ থেকে বেনকে কেড়ে নিয়েছে। তবে কিছুটা সান্ত্বনা পাই এই ভেবে যে বেন ঠিক সেই কাজটাই করছিল, যা সে বহু গ্রীষ্মে করত—বন্ধুদের সঙ্গে নেটে ক্রিকেট খেলছিল। আমরা তার সেই সতীর্থের প্রতিও সমর্থন জানাতে চাই, যে তখন নেটে বল করছিল। এ দুর্ঘটনা দুই তরুণকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে আর আমাদের চিন্তায় সে এবং তার পরিবারও আছে।”
২০১৪ সালে শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের ব্যাটসম্যান ফিলিপ হিউজও ঘাড়ে বলের আঘাতে মারা যান। ওই ঘটনায় পুরো অস্ট্রেলিয়া ও বিশ্ব ক্রিকেটে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। হিউজের মৃত্যুর পর থেকেই খেলোয়াড়দের সুরক্ষার সরঞ্জামে বিভিন্ন উন্নয়ন আনা হয় এবং পরে মাথা ও ঘাড়ে আঘাত প্রতিরোধে সুরক্ষা সরঞ্জাম ও কনকাশন প্রটোকলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। বেন অস্টিনের মৃত্যু আবারও ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলল।










