শনিবার ১১ অক্টোবর, ২০২৫

অনলাইন তথ্য ফাঁস বেড়েছে প্রায় ৮ গুণ

রাইজিং ডেস্ক

Rising Cumilla - Online data leaks
অনলাইন তথ্য ফাঁস বেড়েছে প্রায় ৮ গুণ/প্রতীকি ছবি/রয়টার্স

প্রযুক্তি যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড সার্ভিস এবং ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, ঠিক তখনই ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস বা ডাটা ব্রিচ একটি বৈশ্বিক উদ্বেগে পরিণত হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান সার্ফশার্কের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে অনলাইনে তথ্য ফাঁসের ঘটনা প্রায় ৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে যেখানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭৩ কোটি অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাক ও তথ্য ফাঁস হয়েছিল, সেখানে গত বছর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫০ কোটিতে। এর মানে, গড়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৮০টি অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। সার্ফশার্কের গবেষকরা জানান, যেকোনো অনলাইন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত একটি ই-মেইল ঠিকানা ফাঁস হলে সেটিকে একটি আলাদা হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্ট হিসেবে ধরা হয়েছে, যার ফলে একজন ব্যবহারকারীর একাধিক অ্যাকাউন্ট ফাঁস হলেও সবকটি আলাদাভাবে গণনা করা হয়েছে।

তথ্য ফাঁস হওয়া শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় গত বছর নতুন করে যুক্ত হয়েছে চীন, জার্মানি এবং পোল্যান্ড। ২০২৩ সালে ১২তম অবস্থানে থাকা চীন শীর্ষে উঠে এসেছে, জার্মানি ১৬তম থেকে পঞ্চম স্থানে এবং পোল্যান্ড ১৭তম থেকে দশম স্থানে উঠে এসেছে।

অন্যদিকে, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ভারত, ব্রাজিল, ইতালি এবং যুক্তরাজ্য উভয় বছরই শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অবস্থান করছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বব্যাপী অনলাইন-ভিত্তিক তথ্য ফাঁসের প্রায় অর্ধেক ঘটনা ঘটেছে কেবল চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে।

ক্যাসপারস্কি ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট ইন্টেলিজেন্সের তথ্যমতে, ২০২৩-২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৩ লাখ ব্যাংক কার্ডের তথ্য ডার্ক ওয়েবে ফাঁস হয়েছে, যা গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ধরনের তথ্য ফাঁসে সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব আরও বেড়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি ১৪টি ইনফোস্টিলার (তথ্য চুরি করা ম্যালওয়্যার) আক্রমণের মধ্যে একটিতে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হয়েছে। এতে প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ ডিভাইস আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে শুধু ২০২৪ সালেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯০ লাখের বেশি ডিভাইস।

সার্ফশার্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ঘটা সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনায় ৩০০ কোটির বেশি ই-মেইল ঠিকানা ফাঁস হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি গোপন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই তথ্য প্রকাশিত হয়। ফাঁস হওয়া ই-মেইল অ্যাকাউন্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এর মধ্যে বেশিরভাগই রাশিয়ার, এরপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের অ্যাকাউন্ট।

তবে হ্যাকাররা দাবি করেছে যে তারা নতুন করে কোনো তথ্য চুরি করেনি, বরং বিভিন্ন পাবলিক ডাটা এক জায়গায় সংগ্রহ করে প্রকাশ করেছে।

ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি এখন অনেক কোম্পানির জন্যও এই তথ্য ফাঁস সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে যে ডিজিটাল দুনিয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন কতটা জরুরি।

আরও পড়ুন