শুক্রবার ২২ আগস্ট, ২০২৫

কলকাতায় বাংলায় কথা বলায় বাংলাদেশি তকমা দিয়ে দুই ছাত্রকে মারধর

রাইজিং ডেস্ক

Rising Cumilla - Two students were beaten up for speaking in Bengali
বাংলায় কথা বলায় মার খেলেন দুই ছাত্র, প্রতিবাদে ফুঁসছে কলকাতা/ছবি: সংগৃহীত

নিজের ভাষায় কথা বলাই আজ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে ভারতের অনেক বাংলা ভাষাভাষী নাগরিকের জন্য। ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে বিভিন্ন সময় হয়রানি, এমনকি হামলার শিকার হচ্ছেন তারা। এবার সেই ঘটনাই ঘটল খোদ পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে, দ্য হিন্দু ও টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গত বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে শিয়ালদহ ব্রিজের কাছে একটি মোবাইল দোকানে দরদাম করছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র। অভিযোগ, দোকানের হিন্দিভাষী কর্মচারী তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। যখন ছাত্ররা এর প্রতিবাদ করেন এবং বাংলায় কথা বলতে থাকেন, তখন দোকানদার ও তার সহযোগীরা তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে কটাক্ষ করে এবং আক্রমণ করে।

আহত ছাত্রদের একজন সংবাদমাধ্যমকে জানান, “ওরা আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। বলছিল, তোদের বাংলাদেশি বলব, কী করতে পারিস কর! এরপর মারধর করে আমাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।” আরেকজন বলেন, “আমরা প্রতিবাদ করায় ওরা ছুরি ও বন্দুক দেখিয়ে আমাদের উপর হামলা করে।”

ঘটনার খবর পেয়ে ছাত্রদের সহপাঠীরা সেখানে পৌঁছালে তাদের উপরও হামলা চালানো হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন এবং তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ছাত্রদের পক্ষ থেকে শিয়ালদহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বাংলাপক্ষের নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “গুজরাটে মার খাই, রাজস্থানে মার খাই, এখন কি কলকাতাতেও মার খাব? এখানে বিজেপি সরকার নেই, তবুও অপরাধীরা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না?”

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “শিয়ালদহ কলকাতার প্রবেশদ্বার। সেখানেই যদি কাউকে ‘বাংলাদেশি’ বলে মারধর করা হয়, তাহলে পরিস্থিতির ভয়াবহতা বোঝা যাচ্ছে। অবিলম্বে পুরো ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত।”

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “আগে ভিনরাজ্যে এমন ঘটনা হতো, এখন এখানে হচ্ছে। এই পরিবেশটা ইচ্ছে করেই তৈরি করা হচ্ছে।”

এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন