মার্চ ২৩, ২০২৫

রবিবার ২৩ মার্চ, ২০২৫

৪১৮.৭৩ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বেপজা

৪১৮.৭৩ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বেপজা
৪১৮.৭৩ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বেপজা/ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ২৬টি কোম্পানির সঙ্গে নতুন বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করে দেশি-বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে জোরালো সাড়া পেয়েছে।

বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে (২৪ জুলাই-২৫ ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশে মোট ৪১৮.৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহী ২৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বেপজা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

দেশের সামগ্রিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি এবং আরও বিনিয়োগ আকর্ষণের পদক্ষেপ সম্পর্কে তার কার্যালয়ে জাতীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

বেপজা সভাপতি বলেন, বর্তমানে বেপজার আওতাধীন রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইজেড) প্রায় ৫৬০টি কোম্পানি রয়েছে, যার মধ্যে ৪৪৮টি চালু রয়েছে এবং ১১২টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

বেপজার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে এসব কোম্পানি ইতোমধ্যে ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যার মধ্যে ১২ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এসেছে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ থেকে।

তিনি বলেন, এই অর্জন বেপজার কার্যকর বিনিয়োগ উৎসাহ কৌশল এবং স্থানীয় ও বিদেশি উভয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার সক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরে। বেপজা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে সচেষ্ট রয়েছে এবং এতে অবদান অব্যাহত রাখবে।

জিয়াউর জানান, আটটি ইপিজেড এবং বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলের মোট আয়তন মাত্র ৩,৪৪৫ একর এবং এসব অঞ্চল ইতোমধ্যে ৩৮টি দেশ থেকে বিনিয়োগ পেয়েছে।

তিনি জ্বালানি ও অবকাঠামো, আইসিটি এবং ইলেকট্রনিক্স, কৃষি ব্যবসা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মা-রাসায়নিক এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই অন্বেষণের উপর জোর দেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে… স্থান সীমাবদ্ধতা, যোগাযোগ অবকাঠামো, পুরাতন নীতিমালা ইত্যাদি। তবে, আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি।

বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে বেপজার ভূমিকা বর্ণনা করে জিয়াউর রহমান বলেন, বেপজার আওতাধীন আটটি ইপিজেডের পরিচালিত উদ্যোগগুলো চলতি অর্থবছরের ২৫শে অর্থবছরের শেষ আট মাসে ৫,৫১২.০২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, ইপিজেডের শিল্পগুলো বাংলাদেশের জাতীয় রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ইপিজেডের উদ্যোক্তাদের রপ্তানি ছিল ৭.১ মিলিয়ন ডলার, যা দেশের মোট জাতীয় রপ্তানির ১৬ শতাংশ।

তিনি আরো বলেন, বেপজা দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু নতুন ইপিজেড স্থাপনের পরিকল্পনা করছে যা রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি করবে। তাছাড়া, ডিজিটাইজেশন এবং অটোমেশনের মাধ্যমে পরিষেবা সরলীকরণ প্রক্রিয়া চলছে। ফলস্বরূপ, নতুন বিনিয়োগকারীরা আরও বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হবে যার ফলে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, বেপজা সরকারকে ইপিজেডের উদ্যোক্তাদের রফতানি ভর্তুকি দেওয়ার অনুরোধ করেছে, যা শেষ পর্যন্ত রফতানির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।

বিশ্বে সর্বোচ্চ সংখ্যক সবুজ কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেকসই উৎপাদন খাতে বৈশ্বিক নেতৃত্বদাতা হিসেবে নিজেকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে উল্লেখ করে নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বেপজা তার ইপিজেড উদ্যোগের মধ্যে ২৬টি এলইইডি সনদপ্রাপ্ত কারখানা নিয়ে সবুজ শিল্পায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, যা পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি উচ্চ মান স্থাপন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) দ্বারা বিকশিত লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সার্টিফিকেশন হল সবুজ ভবনের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত রেটিং সিস্টেম। এই এলইইডি সার্টিফিকেশন শক্তি দক্ষতা, পানি সংরক্ষণ, বায়ুর গুণমান এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মূল্যায়ন করে। সার্টিফিকেশনের চারটি স্তর রয়েছে: সার্টিফাইড, সিলভার, গোল্ড এবং প্ল্যাটিনাম। এ ক্ষেত্রে প্ল্যাটিনাম হলো সর্বোচ্চ অর্জন।