কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার আগানগর গ্রামে এক বিরল ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যুর দীর্ঘ ১২২ দিন পর কবর খুঁড়ে হাজী আব্দুল গফুর আল ক্বাদরী (প্রায় ১০০) নামের এক বৃদ্ধের অক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আগানগর গ্রামের ষোলনল ইউনিয়নের সিরাজ চেয়ারম্যান বাড়ির বাসিন্দা হাজী আব্দুল গফুর চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। সম্প্রতি, টানা বৃষ্টির কারণে তার কবরে পানি জমে যায়। এর ফলে পরিবারের সদস্যরা স্বপ্নে দেখেন যে তাদের পিতা কবরের ভেতর কষ্ট পাচ্ছেন। পরবর্তীতে শাহপুর দরবার শরীফের হুজুরের পরামর্শে কবরটি খোঁড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গতকাল রবিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে কবর খোঁড়া হয়। এ সময় উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে দেখেন, সাদা কাফনের কাপড়সহ হাজী আব্দুল গফুরের মরদেহ সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। লাশে কোনো ধরনের পচন বা দুর্গন্ধ ছিল না। এরপর রাত ১১টার দিকে মরদেহটি পুনরায় ইট-সিমেন্টের মাধ্যমে অন্য একটি স্থানে দাফন করা হয়।

নিহতের সন্তান মাওলানা মিজানুর রহমান আল ক্বাদরী, হাজী মো. মনিরুল ইসলাম, প্রভাষক গোলাম মোস্তফা ও হাফেজ মো. মাহবুব আলম জানান, পিতার কষ্টের স্বপ্ন দেখার পরই তারা কবর খুঁড়েছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরাও নিশ্চিত করেছেন যে, ১২২ দিন আগে যেভাবে লাশ দাফন করা হয়েছিল, উদ্ধারকালে তা হুবহু একই ছিল। লাশের হাত-পা বা চেহারায় সামান্যতম পরিবর্তনও হয়নি।

হাজী গফুর আল ক্বাদরী ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ ও পরহেজগার ব্যক্তি। তিনি জীবদ্দশায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও নিয়মিত রোজা পালন করতেন। এছাড়াও তিনি ১০ বার হজ ও ২৯ বার ওমরাহ পালন করেছেন। তিনি সাবেক ইউপি সদস্য, শাহপুর দরবার শরীফের মুরিদ এবং বুড়িচং উপজেলা ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটি ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বুড়িচং উপজেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

বুড়িচং উপজেলা ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. গোলাম হাসান বলেন, "হাজী গফুর আল ক্বাদরী খুবই পরহেজগার ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন।"

জানা গেছে, মৃত্যুকালে তিনি ৪ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।