সৌজন্য সাক্ষাতে অংশ নেওয়াকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) উপাচার্যের কক্ষে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সদস্য আরিফ হোসেন শান্তর নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাতে গেলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। এসময় উপাচার্যের সামনেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ান ছাত্রদলের এই নেতা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন যোগদানের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে উক্ত ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ শেষ করে বের হওয়ার পরই ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন শান্ত তার অনুসারী কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে উপাচার্যের কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য প্রবেশ করেন। সাক্ষাতে আরিফ হোসেন শান্ত নিজেকে উপাচার্যের সামনে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিলে উপাচার্য তাকে রাজনৈতিক পরিচয় দিতে নিষেধ করেন।
আরিফ হোসেন শান্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কার্যনির্বাহী সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের এই কমিটি হয় ২০২১ সালে। ছাত্রদলের এই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্তমান ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ শেষ করে বেরিয়ে যান। এর পরই ছাত্রদল নেতা আরিফের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন শান্ত ও তার অনুসারীদেরকে আলাদাভাবে সাক্ষাতের ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা জিজ্ঞাসা করলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয় দু’পক্ষের মধ্য। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের চুপ করার নির্দেশ দেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের যোগসাজশে ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন শান্ত ও তার অনুসারীরা উপাচার্যের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করতে প্রবেশ করেছেন। এসময় রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিপন হোসেন বলেন, উপাচার্য আমাদের সাথে দ্রুত সাক্ষাৎ শেষ করেন সময় স্বল্পতার এবং কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন তাই। সাক্ষাৎ শেষে আমরা বেরোনোর পরই ছাত্রদলের পরিচয়ে কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে কক্ষে প্রবেশ করে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন শান্ত ও তার অনুসারীদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়।
ছাত্রদলের সদস্য আরিফ হোসেন শান্তর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রতিবেদককে তিনি বলেন আমরা কিছু জানি না আপনি একজন সাংবাদিক হয়ে এত কিছু জানলেন কীভাবে? প্রতিবেদকের কাছে ভিডিও আছে জানালে বলেন, আমরা উপাচার্যের কাছে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে গিয়েছিলাম। এবং আমার সাথে যারা ছিল তারা সবাই সাধারণ শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা সৌজন্যে সাক্ষাৎ শেষ করে বেরিয়ে গেলে আরেকটি পক্ষ সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে সাক্ষাতের জন্য কক্ষে প্রবেশ করে। এর মধ্য একটি ছেলে রাজনৈতিক পরিচয় দিতে গেলে, তাকে উপাচার্য বলেন যে আমি কোনো দলীয় পরিচয় শুনতে চাই না। আপনারা কে কোন বিভাগের শুধু এতটুকু পরিচয় দেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো ধরনের রাজনীতির নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।