বর্তমান যুগ সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারসহ নানা প্ল্যাটফর্মে আমরা আমাদের জীবনের নানা খুঁটিনাটি ঘটনা শেয়ার করি। কিন্তু এই সব সুবিধার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে, তা হলো ট্রলিং।
অনেকের কাছে ট্রলিং মজার বিষয় হলেও, এর প্রভাব অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে। সামান্যতম ভুলের জন্যই অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হয়ে পড়ছেন। ট্রলাররা প্রায়ই ব্যক্তিগত আক্রমণ করে, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে এবং মানহানির মতো অপরাধ করে।
ট্রলিংয়ের প্রভাব:
- মানসিক চাপ: ট্রলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা প্রায়শই হতাশা, উদ্বেগ, এবং একাকিত্ব বোধ করতে পারে।
- আত্মসম্মান কমে যাওয়া: নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য শুনলে একজন ব্যক্তির আত্মসম্মান কমে যেতে পারে।
- সামাজিক জীবনে প্রভাব: ট্রলিংয়ের ভয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা বন্ধ করে দিতে পারে, যার ফলে তাদের সামাজিক জীবনে প্রভাব পড়তে পারে।
- একাগ্রতা ও মনোযোগ কমে যাওয়া: ট্রলিংয়ের ফলে একজন ব্যক্তির একাগ্রতা ও মনোযোগ কমে যেতে পারে।
- কাজে প্রভাব: ট্রলিংয়ের চিন্তায় একজন ব্যক্তির কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হতে পারে।
ট্রলিংয়ের কারণ:
- মনোবৈজ্ঞানিক সমস্যা: অনেক ট্রলারের মধ্যে মনোবৈজ্ঞানিক সমস্যা থাকতে পারে, যেমন, সাইকোপ্যাথি বা নার্সিসিজম।
- বিনোদন: কিছু মানুষ অন্যকে বিরক্ত করে মজা পায়।
- অন্যকে ছোট করার ইচ্ছা: কিছু মানুষ অন্যকে ছোট করে নিজেকে বড় দেখাতে চায়।
- অন্যের প্রতি ঈর্ষা: অন্যের সাফল্য দেখে কিছু মানুষ ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে ট্রল করতে পারে।
কীভাবে ট্রলিং থেকে বাঁচা যায়?
- ইগনোর করা: ট্রলারদের ইগনোর করা সবচেয়ে ভালো উপায়।
- ব্লক করা: ট্রলারদের ব্লক করে দিলে তারা আপনাকে আর মেসেজ করতে পারবে না।
- রিপোর্ট করা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী ট্রলারদের রিপোর্ট করুন।
- পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখা: আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখুন যাতে কেউ আপনার পরিচয় ব্যবহার করে অন্যকে ট্রল করতে না পারে।
- পজিটিভ গ্রুপে যোগদান: পজিটিভ গ্রুপে যোগদান করে আপনি নিজেকে ভালো রাখতে পারেন।
- মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া: যদি ট্রলিংয়ের ফলে আপনি মানসিকভাবে খুব খারাপ বোধ করেন, তাহলে একজন মনোবিদের পরামর্শ নিন।
মনে রাখতে হবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রলিং রোধ করার জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষের সচেতন হওয়া জরুরি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিবার এবং সরকারকে এই বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।