বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর, ২০২৫

সীমান্তে লাউডস্পিকারে ‘ভূতের কান্না’ বাজিয়ে ভয় দেখাচ্ছে থাইল্যান্ড—জাতিসংঘে অভিযোগ কম্বোডিয়ার

রাইজিং ডেস্ক

Thailand is scaring by playing 'ghost cries' on loudspeakers at the border, Cambodia complains to the UN
সীমান্তে লাউডস্পিকারে ‘ভূতের কান্না’ বাজিয়ে ভয় দেখাচ্ছে থাইল্যান্ড—জাতিসংঘে অভিযোগ কম্বোডিয়ার/ছবি: ইপিএত

যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরও থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কম্বোডিয়া অভিযোগ তুলেছে, থাইল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় ‘ভূতের মতো ভয়াবহ শব্দ’ বাজিয়ে মানসিক যুদ্ধ (সাইকোলজিকাল ওয়ারফেয়ার) চালাচ্ছে, যা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন এই গুরুতর অভিযোগটি তুলেছে এবং

এই বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্কের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠিয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেট সভাপতি হুন সেন তার ফেসবুক পোস্টে নিশ্চিত করেছেন যে কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনায় গত শনিবার (১১ অক্টোবর) জাতিসংঘের হাইকমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, থাই সীমান্ত এলাকায় ‘উচ্চস্বরে, ভৌতিক ও তীক্ষ্ণ শব্দ’ বাজিয়ে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন স্থানীয় প্রশাসন ও সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার দাবি করেছে। তাদের অভিযোগ, থাই সেনারা রাতে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে ‘ভূতের মতো আর্তনাদ’ এবং বিমানের ইঞ্জিনের আওয়াজ বাজাচ্ছে। কমিশন জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা এই শব্দ স্থানীয়দের ঘুম নষ্ট করছে, তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে এবং শারীরিক অস্বস্তি ঘটাচ্ছে। মানবাধিকার কমিশন সতর্ক করেছে যে এই ধরনের কার্যকলাপ দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে। তবে, থাই সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হুন সেন আরও জানিয়েছেন যে কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়টি মালয়েশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া গত জুলাই মাসে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছিল।

এদিকে, থাইল্যান্ড পাল্টা অভিযোগ করেছে যে কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় নতুন করে স্থলমাইন বসাচ্ছে। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, গত জুলাই মাস থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ছয়জন থাই সেনা স্থলমাইনের বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। তবে কম্বোডিয়া এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। কম্বোডিয়ার দাবি, থাই সেনারা দেশটির পুরোনো গৃহযুদ্ধ চলাকালে পোঁতা স্থলমাইনের ওপর পা রেখেই আহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতির পরেও সীমান্তে ‘ভূতের আর্তনাদ’ বাজানো, মানসিক চাপ সৃষ্টি করা এবং উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ—সব মিলিয়ে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছানোর পর এই বিষয়টি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে।

 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

আরও পড়ুন