
গত এক সপ্তাহে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পাঠ করানোকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অচলাবস্থার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার এমনটি ভাবছে খবর ছড়িয়ে পড়তেই সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার সমীকরণ নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন নেটিজেনরা।
এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম। দুজনেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার পরিচিত মুখ। তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীতার গুঞ্জন নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ) প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত।
নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে রাফে সালমান রিফাত লিখেছেন, ‘শোনা যাচ্ছে সিটি করপোরেশন নির্বাচন দিবে আসিফ মাহমুদ সরকার। এনসিপির মানুষজন ইশরাক হোসেন বনাম হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রচারণা চালাচ্ছে। যদি নির্বাচন হয়ই, আমি ব্যক্তিগত আরেকটা এংগেল দিই। ইশরাক হোসেন বনাম হাসনাত আব্দুল্লাহ বনাম সাদিক কায়েম। খেলা হবে?’ তার এই পোস্টটি দ্রুতই ভাইরাল হয়েছে এবং রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব উইং জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলামও ইশরাক হোসেন ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গত সাত দিনে ঢাকা শহরে যে নাগরিক-দুর্ভোগ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক অপরিপক্বতা ও অপরিণামদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন, তাতে যদি সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয় এবং সেখানে (রূপক অর্থে) হাসনাত আব্দুল্লাহ যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাহলে ইশরাক হোসেনের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে পারে!’ তারিকের এই মন্তব্য ইশরাক হোসেনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে যে রিট আবেদন করা হয়েছিল, তা খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (২১শে মে, ২০২৫) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর ক্ষেত্রে আপাতত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। তবে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।