বৃহস্পতিবার ২৮ আগস্ট, ২০২৫

সিংহভাগ রেমিট্যান্স আসে ৫ জেলায়: শীর্ষে ঢাকা, দ্বিতীয় চট্টগ্রাম, তৃতীয় কুমিল্লা

নিজস্ব প্রতিবেদক

RisingCumilla.Com - Flow of remittances into Bangladesh
বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ (প্রবাসী আয়ে) | গ্রাফিক্স: রাইজিং কুমিল্লা

দেশের প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) সিংহভাগ আসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট ও নোয়াখালী জেলা থেকে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয় আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী ও চাঁদপুর থেকেও।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস, অর্থাৎ জুলাই মাসের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে দেশে মোট ২৪৭ কোটি ডলার (২ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর মধ্যে বরাবরের মতো ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোয় প্রবাসী আয়ের প্রবাহ সবচেয়ে বেশি, যেখানে রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে এসেছে সবচেয়ে কম।

জেলা ও বিভাগভিত্তিক রেমিট্যান্সের চিত্র

ঢাকা বিভাগ: জুলাই মাসে ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা থেকে এসেছে ১৩৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এর মধ্যে শুধু ঢাকা জেলাতেই এসেছে ১০২ কোটি ৭২ লাখ ডলার, যা দেশের যেকোনো জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ। এর পরেই রয়েছে টাঙ্গাইল (৪ কোটি ৩১ লাখ ডলার) এবং নারায়ণগঞ্জ (৪ কোটি ৫০ হাজার ডলার)। এই বিভাগে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে রাজবাড়ী থেকে, যার পরিমাণ ৮৯ লাখ ডলার।

চট্টগ্রাম বিভাগ: এই বিভাগের ১১টি জেলার প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন মোট ৫৯ কোটি ৮১ লাখ ডলার। এর মধ্যে শীর্ষস্থানে আছে চট্টগ্রাম জেলা (১৬ কোটি ৫৪ লাখ ডলার), এবং দ্বিতীয় অবস্থানে আছে কুমিল্লা (১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার)।

এছাড়া নোয়াখালী থেকে ৭ কোটি ২৮ লাখ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ, ফেনী থেকে ৬ কোটি ১৯ লাখ এবং চাঁদপুর থেকে ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার এসেছে।

তবে এই বিভাগে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে রাঙ্গামাটি ও বান্দরবন থেকে, প্রতিটি জেলা থেকে ১৭ লাখ ডলার।

সিলেট বিভাগ: সিলেটের চারটি জেলা থেকে এসেছে মোট ১৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর মধ্যে সিলেট জেলা একাই পাঠিয়েছে ১০ কোটি ২৬ লাখ ডলার। এরপর রয়েছে মৌলভীবাজার (৩ কোটি ৯২ লাখ), হবিগঞ্জ (২ কোটি ৬৭ লাখ) এবং সুনামগঞ্জ (২ কোটি ৬৬ লাখ)।

খুলনা বিভাগ: এই বিভাগের ১০টি জেলায় মোট ৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে যশোর জেলা শীর্ষে (১ কোটি ৮২ লাখ ডলার)। এরপর কুষ্টিয়া (১ কোটি ৫০ লাখ), খুলনা (১ কোটি ২১ লাখ) এবং ঝিনাইদহ (১ কোটি ২০ লাখ ডলার)। সবচেয়ে কম এসেছে বাগেরহাট থেকে, যার পরিমাণ ৭১ লাখ ডলার।

রাজশাহী বিভাগ: রাজশাহীর ৮ জেলা থেকে রেমিট্যান্স এসেছে মোট ৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। বগুড়া (১ কোটি ৫৬ লাখ) ও পাবনা (১ কোটি ৫১ লাখ) শীর্ষে। এছাড়া চাপাইনবাবগঞ্জ ১ কোটি ৩০ লাখ, সিরাজগঞ্জ ৯৪ লাখ ও রাজশাহী জেলা ৮৯ লাখ ডলার পাঠিয়েছে। সর্বনিম্ন জয়পুরহাট (৪৫ লাখ ডলার)।

বরিশাল বিভাগ: বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলা থেকে এসেছে মোট ৬ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। বরিশাল জেলা একাই দিয়েছে ২ কোটি ৪১ লাখ ডলার। এরপর ভোলা (৯৮ লাখ), পিরোজপুর (৭৭ লাখ), পটুয়াখালী (৫৯ লাখ), বরগুনা (৫৪ লাখ) এবং সর্বনিম্ন ঝালকাঠি (৪৭ লাখ ডলার)।

ময়মনসিংহ বিভাগ: এই বিভাগের চারটি জেলায় রেমিট্যান্স এসেছে ৪ কোটি ২৫ লাখ ডলার। এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলা একাই দিয়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ডলার। জামালপুর থেকে এসেছে ১ কোটি ২৮ লাখ, নেত্রকোনা থেকে ৫৪ লাখ এবং সবচেয়ে কম শেরপুর থেকে ৩২ লাখ ডলার।

রংপুর বিভাগ: রংপুর বিভাগের আটটি জেলা থেকে মোট ৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে গাইবান্ধা থেকে (৮৬ লাখ ডলার), এরপর রংপুর (৫৯ লাখ) এবং দিনাজপুর (৫২ লাখ ডলার)। সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছে লালমনিরহাট থেকে, মাত্র ১৩ লাখ ডলার, এবং পঞ্চগড় থেকে এসেছে ১৮ লাখ ডলার।

আরও পড়ুন