মে ২৫, ২০২৫

রবিবার ২৫ মে, ২০২৫

সামাজিক ভীতি কেন হয়? কী কী সমস্যা এবং মুক্তির উপায়

RisingCumilla - Social Anxiety
প্রতীকি ছবি/সংগৃহীত

আজকাল অনেকেই সামাজিক ভীতি বা সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে ভুগছেন। এই সমস্যা শুধু সাময়িক অস্বস্তিই নয়, দীর্ঘমেয়াদে এটি ব্যক্তিত্বের গুরুতর জটিলতা বা পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে রূপ নিতে পারে। কিন্তু কেন হয় এই ভীতি? এর লক্ষণগুলোই বা কী? আর কীভাবে এর থেকে মুক্তি মিলবে?

সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে ভোগা ব্যক্তিরা প্রায়শই যে কোনো সামাজিক পরিস্থিতিতে এক ধরণের অযৌক্তিক ভয় অনুভব করেন। তাদের মনে হতে থাকে, কেউ হয়তো তাদের পছন্দ করছে না, বা তাদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। এই ভীতি এতটাই তীব্র হতে পারে যে, এটি দৈনন্দিন জীবনে স্বাভাবিক কাজকর্মেও বাধা সৃষ্টি করে।

কখন এই ভীতি প্রকাশ পায়?

বিশেষ করে যে কাজগুলোতে অন্যের সামনে নিজেদেরকে তুলে ধরতে হয় বা মূল্যায়িত হওয়ার সুযোগ থাকে, সেখানেই অ্যাংজাইটির জন্ম হয়। যেমন:

  • মিটিংয়ে কথা বলতে গেলে
  • সামাজিকভাবে আড্ডা দিতে গেলে
  • নতুন কারো সাথে পরিচিত হতে গেলে
  • অন্যের সামনে কিছু পারফর্ম করতে গেলে

এই ধরণের পরিস্থিতিতে মানুষ তীব্র অস্বস্তি এবং ভয় অনুভব করে।

শারীরিক ও মানসিক প্রভাব

সোশ্যাল অ্যাংজাইটির প্রভাবে নানা রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। ডা. মেখলা সরকার, একজন সাইকিয়াট্রিস্ট, একটি পডকাস্টে বলেছেন, “সোশ্যাল অ্যাংজাইটি দেখা দিলে ব্যক্তির মনে হয়, আমাকে আরেকজন খুব নেতিবাচকভাবে দেখছে। আমাকে বোধহয় খুব অকোয়াড লাগছে।” এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তির পারফরম্যান্স সত্যিই খারাপ হয়ে যায়।

লক্ষণগুলো কী কী?

  • গলা শুকিয়ে যাওয়া
  • বুক ধড়ফড় করা
  • তীব্র নার্ভাস অনুভব করা
  • হাত কাঁপা
  • শ্বাসকষ্ট হওয়া
  • মানসিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়া

এই সমস্যা মানুষের সামাজিক সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয় এবং জীবনের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেয়।

কাদের ঝুঁকি বেশি?

কিছু কারণ আছে যা সোশ্যাল অ্যাংজাইটির ঝুঁকি বাড়ায়:

  • আবেগ নিয়ন্ত্রণহীনতা: যারা নিজেদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, তাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
  • জিনগত কারণ: জেনেটিক বা জিনগত কারণেও সোশ্যাল অ্যাংজাইটি হতে পারে।
  • মস্তিষ্কের ত্রুটি: মস্তিষ্কের ‘অ্যামিগডালা’ অংশে গুণগত মানের ত্রুটি থাকলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • শৈশবের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা: শৈশবে যদি কেউ সমালোচনা, নেতিবাচক মন্তব্য, বুলিং বা খারাপ আচরণের শিকার হয়, তাহলেও পরবর্তী জীবনে সোশ্যাল ফোবিয়া দেখা দিতে পারে।

মুক্তির উপায়

সোশ্যাল অ্যাংজাইটি একটি চিকিৎসাযোগ্য সমস্যা। এর থেকে মুক্তি পেতে সাইকোথেরাপির অংশ হিসেবে কিছু বিহেভিওরাল থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

আরও পড়ুন