
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র ও অনন্য অলরাউন্ডার হিসেবে পরিচিত সাকিব আল হাসান। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে যিনি ব্যাট ও বলে সমানতালে কোটি ভক্তের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন, সেই সাকিবকে আর কখনো জাতীয় দলের জার্সিতে খেলতে দেওয়া হবে না বলেই জানিয়ে দিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
গতকাল সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর-এর সঙ্গে মুঠোফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন আসিফ মাহমুদ।
গত দুই দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টের জেরে সাকিব ও আসিফের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ভার্চুয়াল লড়াই চলছিল। এই লড়াইয়ের মধ্যেই তারকা ক্রিকেটারকে নিয়ে এর মধ্যেই নিজের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘তাকে (সাকিবকে) বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের জার্সির পরিচয় বহন করতে দেওয়া এটা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব না।
ইতোপূর্বে এটা আমি বিসিবিকে না বললেও এখন আমার বোর্ডের প্রতি স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে, সাকিব আল হাসান আর কখনো বাংলাদেশ টিমে খেলতে পারবেন না।’
কেন এমন সিদ্ধান্ত, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেনক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘যতবার তিনি (সাকিব) দেশে আসার জন্য চেয়েছেন, খেলার জন্য চেয়েছেন, বলেছেন “আমাকে জোর করে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না।
আমি শুধু এমপি ইলেকশনটা করেছি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি।” কিন্তু আসল সত্যটা তো হচ্ছে, তিনি আসলে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠেভাবে জড়িত, যার প্রমাণ আমরা পেলাম।’
প্রমাণ বলতে আসিফ মাহমুদ আসলে সাকিবের একটা ফেসবুক স্ট্যাটাসের কথা বুঝিয়েছেন। যে পোস্ট থেকে এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। মূলত গত রোববার রাত ৯টার দিকে ফেসবুকে গণঅভ্যুত্থানের পর পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নিজের একটা ছবি দিয়ে পোস্ট করে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান সাকিব।
সেই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন, আপা।’ মূলত, এই পোস্টের পর থেকেই সাকিব-আসিফের ভার্চুয়াল লড়াই শুরু হয়।
তবে এর আগে পেছনের ঘটনাও একটু মনে করা যাক। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময়কালে সাকিব ছিলেন দেশের বাইরে। এরপর আর দেশে ফিরতে পারেননি নৌকা প্রতীকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়া সাকিব।
আরও অনেকের মতো সাকিবের নামেও হত্যা মামলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে, আছে দুদকের মামলাও।