মে ১৫, ২০২৫

বৃহস্পতিবার ১৫ মে, ২০২৫

সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে ফের আলোচনা

Rising Cumilla - govt
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা প্রদানের বিষয়টি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সরকারি পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গ্রেড ভেদে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে আগামী ২০ মে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে মহার্ঘ ভাতার সংস্থান নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটি তাদের পর্যালোচনার পর গ্রেড অনুযায়ী ১০ থেকে ২০ শতাংশ ভাতা প্রদানের সুপারিশ করে এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই এটি কার্যকর করার পরিকল্পনা ছিল।

তবে, বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে সরকার সেই সময়ে মহার্ঘ ভাতা প্রদান থেকে পিছিয়ে আসে। গত ২৮ জানুয়ারি অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, মহার্ঘ ভাতার বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এমনকি তিনি এও বলেছিলেন যে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাবনা এলে তবেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অর্থ উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পর বিষয়টি চাপা পড়ে গেলেও, চার মাস পর ফের একবার সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে মহার্ঘ ভাতা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামো সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নবায়ন করার নিয়ম রয়েছে। সর্বশেষ বেতন কাঠামো কার্যকর হয়েছিল ২০১৫ সালে। এরপর আর কোনো নতুন কাঠামো আসেনি।

তিনি আরও জানান, অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি আগামী সপ্তাহেই এই বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসবে। যদি সেই বৈঠকে সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, তবে আগামী জুলাই মাস থেকে এটি কার্যকর হতে পারে। এমনকি আসন্ন নতুন অর্থবছরের বাজেটেও এ বিষয়ে ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, অর্থ বিভাগ সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর মূল বেতনের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার একটি প্রাথমিক প্রস্তাবনা তৈরি করেছিল। তবে, এর পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীদের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিলের সুপারিশও করা হয়েছে। অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, এটি বাস্তবায়িত হলে সরকারের অতিরিক্ত পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।

অর্থ বিভাগের প্রাথমিক প্রস্তাবে ব্যয় নিয়ন্ত্রণের জন্য ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও, প্রথম থেকে দশম গ্রেডের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ১০ অথবা ১৫ শতাংশ হারে ভাতা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনাধীন ছিল। প্রথম থেকে দশম গ্রেডে ১০ শতাংশ ভাতা দেওয়া হলে সরকারের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং ১৫ শতাংশ ভাতা দেওয়া হলে প্রায় পাঁচ হাজার সাতশত পঞ্চাশ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হতে পারত। অর্থ বিভাগ এই পরিমাণ অর্থ সংস্থান করে সংশোধিত বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছিল।

আরও পড়ুন