মঙ্গলবার ১৫ জুলাই, ২০২৫

সমুদ্রপথে ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যুর শীর্ষে বাংলাদেশিরা

প্রতীকী ছবি/সংগৃহীত

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে ইউরোপে অবৈধভাবে পাড়ি জমাতে গিয়ে ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে অন্তত ৭৬০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রাণ হারিয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যকই বাংলাদেশি নাগরিক।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফ্রন্টেক্স এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে অনিয়মিত অভিবাসনের সবচেয়ে বিপজ্জনক রুট হলো লিবিয়া থেকে ইতালিগামী সেন্ট্রাল মেডিটারেনিয়ান পথ। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এই পথ ব্যবহার করে ইউরোপে যাত্রার হার ২৯ হাজার ৩০০-তে পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে প্রবেশ করেছেন প্রায় ২০ হাজার ৮০০ জন, যাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। ফ্রন্টেক্সের তথ্যমতে, লিবিয়া থেকে ইউরোপমুখী যাত্রীদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশি, এরপর রয়েছে মিসরীয় ও আফগান নাগরিকরা।

এই বিপজ্জনক পথে পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই পাচারকারী চক্রের ফাঁদে পড়ছেন, কেউ প্রাণ হারাচ্ছেন, কেউ চিরতরে নিখোঁজ হচ্ছেন। যদিও ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ইউরোপে মোট অনিয়মিত অভিবাসনের সংখ্যা কমে ৭৫ হাজার ৯০০-তে দাঁড়িয়েছে, তবুও মৃত্যুর মিছিল থামেনি। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয়, পশ্চিম বলকান ও পশ্চিম আফ্রিকান রুটে প্রবেশের হার কমলেও সেন্ট্রাল মেডিটারেনিয়ান রুটে প্রবণতা বেড়েছে।

এছাড়াও, ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে লিবিয়া থেকে গ্রিসের ক্রিট দ্বীপমুখী একটি নতুন করিডর গড়ে উঠেছে, যেটি বর্তমানে পাচারকারীরা বেশি ব্যবহার করছে। পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অভিবাসন ১৯ শতাংশ বেড়েছে এবং শুধু জুন মাসেই অবৈধ প্রবেশ দ্বিগুণ হয়েছে। আলজেরিয়া থেকে যাত্রার হার বেড়েছে ৮০ শতাংশ। এই রুট ব্যবহার করছে মূলত সোমালিয়া ও অন্যান্য আফ্রিকান দেশের অভিবাসীরা।

এদিকে, ইংলিশ চ্যানেল রুটে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টাও ২৩ শতাংশ বেড়েছে। জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত এ রুটে ফ্রান্স হয়ে ইংল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টা করেছেন ৩৩ হাজার ২০০ জন।

ফ্রন্টেক্স ও আইওএম-এর মতে, অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মানবিক সংকট, পাচার এবং মৃত্যুর হার এখনো উদ্বেগজনকভাবে রয়ে গেছে।

আরও পড়ুন