
সন্তানদের সময়মতো বিয়ে দেওয়ার দাবিতে বর সেজে এক অভিনব প্রতিবাদ করেছেন রেজা নামের এক যুবক। তিনি নিজেও এখনও অবিবাহিত। মঞ্চ নাটকের সঙ্গে যুক্ত এই যুবকের বাড়ি রংপুর সিটি করপোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ড আমাশু কুকরুল এলাকায়। সম্প্রতি তিনি রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে এই ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর প্রেসক্লাবের সামনে রেজা মাথায় ঐতিহ্যবাহী পাগড়ি ও শরীরে শেরোয়ানি পরে, চোখে সানগ্লাস ও গলায় ফুলের মালা ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর হাতে থাকা রঙিন কালিতে প্রিন্ট করা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— ‘সন্তানদের বিয়ে সময়মতো দিলে সমাজ থেকে খারাপ কাজ অনেক কমে যাবে।’ এই অভিনব প্রতিবাদের কারণে তাকে ঘিরে অনেকেই ছবি তুলছিলেন এবং কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। এক ঝলক ভালো করে দেখার জন্য পথচারীরা গাড়ি থামাচ্ছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে এই বার্তা পৌঁছে দেন।
অভিনব প্রতিবাদকারী যুবক রেজা তাঁর প্রতিবাদের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমাদের অভিভাবকেরা সন্তানের বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেও তাদের এখনও ছোট মনে করেন। অথচ সরকারিভাবে মেয়েদের ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা অনেকে সময় পড়ালেখা শেষ করার অপেক্ষায় থাকি। এই অপেক্ষা শেষ পর্যন্ত চাকরির অপেক্ষায় গড়ায়। এভাবেই কখন যে বয়স ৩০ পেরিয়ে যায়, তা ভাবনায় আসে না।”
তিনি আরও বলেন, “এই যৌবনকালে ছেলেমেয়েরা প্রেম ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে। অনেকে নানা রকম খারাপ কাজের সঙ্গেও যুক্ত হয়। সময়মতো বিয়ে দিলে এই খারাপ কাজটা আর হতো না। দেশের বিভিন্ন পার্কে গেলেই হাজারো তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীর দেখা মেলে, যারা পার্কেই সুযোগ পেলে অনৈতিক কাজ করছেন।”
রেজা স্পষ্ট করে বলেন, “আমার আজকের প্রতিবাদ অভিভাবকদের প্রতি। এই অভিনব প্রতিবাদের মাধ্যমে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলব, আপনার সন্তানের বিয়ের বয়স হলে আর অপেক্ষা না করে বিয়ে দিয়ে দিন।”
এ বিষয়ে কবি ও শিক্ষক বেলায়েত হোসেন বলেন, “অবশ্যই ছেলে-মেয়েদের প্রাপ্ত বয়সেই বিয়ে দেয়া উচিত। মূলত আমাদের দেশে চাকরি বা কাজে যোগদানে বিলম্ব হওয়ার কারণে বিয়েও দেরি হয়। আবার অনেকে আছেন, যারা চাকরি পাওয়ার পরও বিয়ে করেন না বা পরিবারের লোকজনও বিয়ে দিতে চান না। তবে সরকারিভাবে নির্ধারিত বয়স হলেই বিয়ে দেয়া উচিত বলে মনে করি।”