
প্রতিবছরের মতো এবারও সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস ২০২৫’ রিপোর্ট। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। বরাবরের মতো, এবারও বিশ্বের ১৪৭টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে উঠে এসেছে ফিনল্যান্ডের নাম। যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৪তম।
ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে টানা অষ্টমবারের মতো তালিকার শীর্ষে রয়েছে ফিনল্যান্ড। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের গাজায় আগ্রাসন চালানো ইসরায়েলের অষ্টম স্থানে উঠে আসা বেশ চমক সৃষ্টি করেছে।
ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের ওয়েলবিং রিসার্চ সেন্টার, ব্রিটিশ জরিপ সংস্থা গ্যালপ এবং জাতিসংঘের সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্কের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। সুখ পরিমাপের ক্ষেত্রে এ বছর মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, যত্ন এবং দয়ার মতো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
শীর্ষে ফিনল্যান্ড, ইউরোপের আধিপত্য:
প্রতিবেদনে দেখা যায়, শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলোর আধিপত্য বজায় রয়েছে। ফিনল্যান্ডের পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডেনমার্ক, তৃতীয় আইসল্যান্ড এবং চতুর্থ স্থানে সুইডেন। নেদারল্যান্ডস রয়েছে তালিকার পঞ্চম স্থানে।
এছাড়া, কোস্টারিকা ষষ্ঠ, নরওয়ে সপ্তম, লুক্সেমবার্গ নবম এবং মেক্সিকো দশম স্থানে রয়েছে।
তলানিতে আফগানিস্তান, দক্ষিণ এশিয়ায় হতাশা:
সুখের তালিকায় সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। এছাড়া, সিয়েরা লিওন, লেবানন, মালাবি, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, কঙ্গো, ইয়েমেন, কমোরোস এবং লেসোথো রয়েছে তালিকার একেবারে তলানিতে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপাল (৯২তম) এবং পাকিস্তান (১০৯তম) বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। তবে, ভারত (১১৮তম) এবং শ্রীলঙ্কা (১৩৩তম) বাংলাদেশের কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।
প্রতিবেদন তথ্যমতে, বিশ্বের সবচেয়ে ২০টি সুখী দেশ হলো ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, কোস্টারিকা, নরওয়ে, ইসরায়েল, লুক্সেমবার্গ, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, লিথুয়ানিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, স্লোভেনিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্র (চেকিয়া)।
বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশও থেকে গ্যালাপ বিশ্ব জরিপের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারী মানুষদের আগের ৩ বছর (এবারের প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে ২০২২-২০২৪) তাদের জীবন কেমন কেটেছে, তা মূল্যায়ন করতে বলা হয়।
অংশগ্রহণকারীদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্টির মাত্রা সম্পর্কে জানাতে বলা হয় এবং সে অনুযায়ী সুখী দেশের তালিকায় ওই দেশের অবস্থান নির্ধারিত হয়। পাশাপাশি, এ প্রতিবেদনে ছয়টি সূচককেও বিবেচনায় নেওয়া হয়। এই সূচকগুলো হলো—মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), সামাজিক সহায়তা, সুস্থ জীবনযাপনের প্রত্যাশা, জীবনযাপনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, বদান্যতা এবং দুর্নীতি নিয়ে মনোভাব।