
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় আড্ডাবাজিতে মগ্ন চার স্কুলছাত্র নজরে পড়েন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিনের। পরে তাদের ডেকে কম্পোজিশন লিখতে দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা এবং পরের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনারত ছবি স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ইউএনও মো. আলাউদ্দিন হাতিয়া উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকার পুকুরপাড় দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় তিনি পুকুরঘাটের সিঁড়িতে চার কিশোরকে মোবাইল ফোনে গেমসে ব্যস্ত অবস্থায় আড্ডা দিতে দেখেন। তাদের কাছে গিয়ে ইউএনও তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা সবাই স্থানীয় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র বলে জানায়।
এরপরই ইউএনও তাদের চারজনকেই তার সরকারি বাসভবনের একটি কক্ষে ডেকে পাঠান। সেখানে তাদের হাতে খাতা-কলম ধরিয়ে দিয়ে একটি বিষয় মুখস্থ করে কম্পোজিশন লিখতে বলেন। পরে একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক এসে অন্যদের সঙ্গেও কথা বলেন এবং সবাইকে বাড়িতে নিয়ে যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউএনও মো. আলাউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, তিনি আড্ডা দিতে দেখে ওই চার ছাত্রকে ডেকে নিয়ে পড়াশোনায় বসিয়েছিলেন এবং তাদের মুখস্থ করে লিখতে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “চাইলে আরও কঠোর শাস্তি দিতে পারতাম, কিন্তু তারা ছাত্র— এই বিবেচনায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।”
ইউএনও আরও জানান, উপজেলা পরিষদ এলাকায় সন্ধ্যার পর কোনো ছাত্রকে আড্ডা দিতে দেখলে একইভাবে ডেকে নিয়ে পড়াশোনায় বসানো হবে। তার মতে, “আড্ডা নয়, এই বয়সটা পড়াশোনার।”
ইউএনও’র এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ইতিবাচক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
অনেকেই মন্তব্য করেছেন যে, শাস্তি নয়, এমন মানবিক উদ্যোগই যুবসমাজকে বদলে দিতে পারে। কাশেম উদ্দিন নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। তবে এরপর থেকে যারা আড্ডা দেবে রাতে, তাদের শাস্তির বিধানটাও চালু হোক, তবে সংশোধন হবে।”