নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্র পরিষদ গঠনে বার্ষিক সিজিপিএ (YCGPA) ভিত্তিক মনোনয়নের সিদ্ধান্ত ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ১২ জুন জারি করা এক নোটিশকে ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন শিক্ষক মহলের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য।
নোবিপ্রবির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল কাইয়ুম মাসুদ নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে জানান, বিতর্কিত এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্বেগকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, "নোবিপ্রবিতে ছাত্র পরিষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ জারি করেছে। এই নোটিশটি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একজন শিক্ষক হিসেবে বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, তাই কিছু কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি।"
তিনি বলেন, নোটিশটি ২০০৮ সালের ষষ্ঠ রিজেন্ট বোর্ডে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। অথচ সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ড সভা ছিল ৫৮তম, যা অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। সে হিসেবে এটি বর্তমান রিজেন্ট বোর্ডের কোনো সিদ্ধান্ত নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, "২০০৮ সালের সিদ্ধান্ত কেন ২০২৫ সালে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে? তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ ছিল ৪-৫টি, শিক্ষক ২০-৩০ জন, শিক্ষার্থী ১-১.৫ হাজার। অথচ এখন বিভাগ ৩১টি, শিক্ষক ৪০০-এর বেশি এবং শিক্ষার্থী প্রায় ১০ হাজার।"
তিনি আরও বলেন, "অনেকেই মন্তব্য করছেন, এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি বা আমার মতো আরও কিছু শিক্ষক জড়িত। আমি স্পষ্ট করে জানাতে চাই, এই নোটিশের সঙ্গে আমার কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই এবং বিষয়টি আমি আগে জানতামও না।"
সিজিপিএ দিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণের ধারণাকে একেবারেই খণ্ডন করে তিনি লেখেন, "আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, CGPA দিয়ে কখনো নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করা যায় না। জুলাই বিপ্লবে আমরা উচ্চ CGPA পাওয়া শিক্ষার্থীদের রাস্তায় জীবন বাজি রাখতে দেখিনি। বরং দেখেছি একদল সাহসী তরুণ-তরুণীকে, যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল।"
২০০৮ সালের সিদ্ধান্তকে তিনি ‘জুলাই ২৪’ আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থি বলেও মন্তব্য করেন।
শেষে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ড. কাইয়ুম বলেন,শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে আমার সবসময় একাত্মতা ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমি আশাবাদী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানে পৌঁছাবে।"
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC