গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি জেমিনি-র 'ন্যানো ব্যানানা শাড়ি ট্রেন্ড' এখন ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তুমুল জনপ্রিয়। কিন্তু এই ট্রেন্ডে অংশ নিয়ে এক নারী তাঁর এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ্যে আনায় ইন্টারনেটে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে ওই নারী জানান, তিনি এই ট্রেন্ডে যোগ দিয়ে নিজের একটি ছবি জেমিনিতে আপলোড করেন এবং একটি শাড়ি পরা এডিটেড ছবি তৈরি করার অনুরোধ করেন। কিন্তু জেমিনি যে ছবিটি তৈরি করে, তা দেখে তিনি পুরোপুরি হতবাক হয়ে যান।
ওই নারী বলেন, "আমি যখন ছবিটি জেনারেট করলাম, তখন খুবই ভয়ঙ্কর একটা জিনিস দেখলাম। জেমিনি কীভাবে জানল যে আমার শরীরের এই জায়গায় একটি তিল আছে? ছবিতে সেটা স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, "এটা খুবই ভয়ঙ্কর ও অস্বস্তিকর। আমি এখনো বুঝতে পারছি না এটা কীভাবে হলো।" এই ঘটনা সবাইকে সচেতন থাকার বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, "সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা এআই প্ল্যাটফর্মে কিছু আপলোড করার আগে সাবধান হন।"
আসলে, ওই নারী একটি ফুল স্লিভ (পূর্ণ হাতার) সালোয়ার-কামিজ পরা ছবি আপলোড করেছিলেন। কিন্তু জেমিনির তৈরি করা ছবিতে তাঁকে শাড়ি পরা অবস্থায় দেখা যায়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, শাড়ির আঁচলের নিচে তাঁর ডান হাতে থাকা একটি তিল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল, যা বাস্তবেও তাঁর হাতের একই জায়গায় রয়েছে।
ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়েছে এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ লাখ ভিউ পেয়েছে। শত শত ব্যবহারকারী ভিডিওর নিচে মন্তব্য করে তাঁদের একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, জেমিনির তৈরি করা ছবিতে এমন কিছু দেখা গেছে যা মূল ছবিতে ছিল না।
এ প্রসঙ্গে একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, "সবকিছুই এখন একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। জেমিনি যেহেতু গুগলের, আর গুগল আমাদের ফোনের ছবি ও ভিডিও স্ক্যান করতে পারে। তাই এই ছবিগুলো বানানো হয় আরও নির্ভুলভাবে।"
আরেকজন ব্যবহারকারী লেখেন, "আমার ক্ষেত্রেও এমন হয়েছিল। আমার শরীরের ট্যাটু, যা ছবিতে দেখা যাচ্ছিল না, সেটাও জেমিনির বানানো ছবিতে স্পষ্ট দেখা গেছে।"
তৃতীয় একজন মন্তব্য করেছেন, "এটাই এআইয়ের কাজ। আপনার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিশ্লেষণ করে এআই আপনার অতীতের ছবি ব্যবহার করে রিয়েলিস্টিক বা বাস্তবধর্মী ছবি তৈরি করে।"
অন্য একজন বলেছেন, "এটা পুরোপুরি টেকনিক্যাল বিষয়। এআই আপনার ইন্টারনেটে আপলোড করা ছবি বিশ্লেষণ করে এবং অনুরোধ অনুযায়ী রিয়েলিস্টিক ইমেজ বানায়। ব্যস, এতটুকুই।"
ন্যানো ব্যানানা হলো গুগলের জেমিনি অ্যাপে থাকা একটি ইমেজ এডিটিং এআই মডেল। এটি প্রথমে থ্রিডি ফিগার-জাতীয় এডিট তৈরির জন্য জনপ্রিয়তা লাভ করে, এবং পরবর্তীতে এটি 'শাড়ি ট্রেন্ড'-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ব্যাপক বিস্তার লাভ করে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাঁদের নিজেদের ছবিকে এমনভাবে রূপান্তর করতে পারেন, যেন তাঁরা প্রাচীন বা ক্লাসিক প্রেক্ষাপটে শাড়ি পরিহিত অবস্থায় রয়েছেন। তবে এই সুবিধাই এখন গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রযুক্তি যেমন মানুষের জীবনকে সহজ করে, তেমনি এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতাও জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের এআই টুল ব্যবহারের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে ব্যবহারকারীদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC