
রমজান মাসের শেষ দশকে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এই রাতটি হলো লাইলাতুল কদর। আরবি শব্দ “লাইলাতুল কদর” অর্থ ভাগ্যরজনী। হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এই রাতে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন এবং বান্দাদের দোয়া কবুল করেন।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত:
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন—
“নিশ্চয়ই আমি এটি (পবিত্র কুরআন) নাযিল করেছি লাইলাতুল কদরে। তুমি কি জানো কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও অধিক উত্তম। এ রাতে ফেরেশতা আর রূহ তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রত্যেক কাজে অবতীর্ণ হয়। (এ রাতে বিরাজ করে) শান্তি আর শান্তি— ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত।”
(সুরা কদর, আয়াত: ১-৫)
শবে কদর কোন রাতে হয়?
রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর যেকোনো একটি রাতই শবে কদর হতে পারে। তবে বিভিন্ন হাদিস ও আলেমদের মতে, রমজান মাসের ২৭ তারিখে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, যা ২৬তম রোজার রাতে পড়ে।
শবে কদরে নবীজির আমল:
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে—
“যখন রমজানের শেষ দশক আসতো, তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার লুঙ্গি কষে নিতেন (অর্থাৎ ইবাদতে মনোনিবেশ করতেন), রাতে জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৯৭)
লাইলাতুল কদরের দোয়া:
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, আমি বললাম—
“ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.)! কোন রাতটি লাইলাতুল কদর, তা যদি আমি জানতে পারি তবে সে রাতে কী দোয়া করব?”
নবীজি (সা.) উত্তর দিলেন—
দোয়া:
উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিমুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।”
অর্থ:
“হে আল্লাহ! তুমি তো খুবই ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাই তুমি ভালোবাস। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দাও।”
(মেশকাত, হাদিস: ২০৯১; তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
মনে রাখবেন, শবে কদরের সঠিক রাত কোনটি তা আমাদের জানা নেই। তবে, রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলো (২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯) শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই রাতের বরকত লাভের তৌফিক দান করুন। আমিন।