এপ্রিল ১৩, ২০২৫

রবিবার ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আটকেপড়া আরও ১৬৭ বাংলাদেশি

Another 167 stranded Bangladeshis return home from Libya
ছবি: সংগৃহীত

উত্তর আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ লিবিয়ায় অনিয়মিত অভিবাসী হিসেবে মানবেতর জীবনযাপন করা আরও ১৬৭ জন বাংলাদেশি অবশেষে দেশে ফিরে এসেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ভোর ৫টায় বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করানো হয়।

আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, লিবিয়ার বেনগাজি ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সক্রিয় সহায়তায় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তত্ত্বাবধানে ১৬ জন স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার সুযোগ পান। অন্যদিকে, দেশটির গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৫১ জনসহ মোট ১৬৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক এই ফ্লাইটে করে নিজেদের মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছেন।

বিমানবন্দরে পৌঁছালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা আবেগঘন পরিবেশে তাদের অভ্যর্থনা জানান। দীর্ঘদিনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বজনদের কাছে ফিরতে পারায় আগতদের চোখেমুখে ছিল আনন্দ ও স্বস্তির ছাপ।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেরত আসা এই বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি মূলত সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টাকালে মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। সেখানে তারা অনেকেই অপহরণ ও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।

বিমানবন্দরে উপস্থিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় অবৈধ পথে লিবিয়ায় না যাওয়ার জন্য সকলের প্রতি কঠোর আহ্বান জানান। তারা বলেন, এমন বিপজ্জনক পথ বেছে নিলে জীবনহানির ঝুঁকি তো থাকেই, উপরন্তু বন্দি হয়ে অমানবিক কষ্টের শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে দেশে ফেরা প্রত্যেক অভিবাসীকে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা, খাদ্যসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, যাদের আপাতত থাকার জায়গার প্রয়োজন, তাদের জন্য অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে এখনও কিছু বাংলাদেশি আটকা পড়ে আছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ত্রিপলিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা যৌথভাবে তাদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।