মার্চ ২২, ২০২৫

শনিবার ২২ মার্চ, ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে ঈদের কেনাকাটা: দেশীয় পোশাকেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি

প্রতীকি ছবি/সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুরে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট শপিং মহলগুলোয় গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। ঈদের কেনাকাটায় জেলা শহরের সব অভিজাত বিপণী বিতানের দোকানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে শহরের শপিং মহলগুলো সাজানো হয়েছে রঙিন আলোকসজ্জা দিয়ে।

ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা জানায়, লক্ষ্মীপুরের ৫টি উপজেলা ও চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকাসহ জেলা শহরের পৌর বিপনী বিতান, পৌর সুপার মার্কেট মসজিদ মার্কেট, আউট লুক, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, বুটিক হাউজ, জিয়া কমপ্লেক্স, গাজী কমপ্লেক্স, সোহাগ, সুচয়ন ও অঙ্গশোভাসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে দেখা গেছে উপছে পড়া ভিড়। ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই মার্কেটগুলোতে লোকজনেরও কেনাকাটা ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। শুধু ইফতারের সময় ছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ বাজারে এসেছে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় সব পোশাক। তবে এবার ভারতীয় ‘টিভি সিরিয়ালের’ নামে পোশাকের ছড়াছড়ি খুব একটা নেই। এবার বাজারে দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আধুনিক ডিজাইনের সব ধরনের পোশাক রয়েছে।

এছাড়া পাঞ্জাবি, শার্ট, গেঞ্জি, ফতোয়া, থ্রি-পিস, টুপিস ও শিশুদের জন্য সব ধরনের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে শহরের দোকানগুলোতে। শেষ সময়ের ক্রেতাদের বেশিরভাগই নারী। এদিকে শহরে ঈদের বেচাকেনাকে ঘিরে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে জানিয়েছেন ক্রেতা বিক্রেতারা।

ছোট ছোট বাচ্চারা ঈদের আনন্দকে পরিপূর্ণ করার জন্য কে কার আগে সুন্দর পোশাকে নিজেকে উপস্থাপন করবে এ প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। সেটা হোক না যত দামি পোশাক। এ দিকে থেমে নেই তরুণীরাও পছন্দের পোশাকের সাথে মিলিয়ে কসমেটিক্স জুতা কিনতে ভুল করছে না তারা।

লক্ষ্মীপুর শহরের হর্কাস মাকেটের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ ও আবু সায়েদ বলেন, গত কয়েক বছর ভারতীয় পোশাকের একক আধিপত্য থাকলেও এবার চাহিদা বেড়েছে পাকিস্তানি পোশাকেরও। অন্য বছরের চেয়ে এবার বেচা-কেনা অনেক ভালো। আবার দামও ক্রেতাদের নাগালের ভিতরে রয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে সন্তষ্ট প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি অন্য বছর চাঁদাবাজি থাকলেও এবার তা নাই। ব্যবসায়ীরা মনখুলে ব্যবসা করছেন। রাত-দিন দোকান-পাট খোলা থাকছে। গভীর রাত পর্যন্ত বেচা-কেনা চলছে। ক্রেতাদের সরগরমে জমে উঠেছে প্রত্যেকটি মার্কেট।

মার্কেটে আসা আবদুল মতিন ও ইউসুফ হোসেন বলেন, এবার দেশীয় পণ্যের চাহিদা অনেক বেশি। তবে ভারতের জামা কাপড়ের চাহিদা কমেছে। এখন পাকিস্তানের জামা-কাপড়ের চাহিদা অনেক বেশি। অন্য বছরের তুলনায় পোশাকের দাম ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। গরমের সাথে মিল রেখে দেশীয় তৈরি জামা-কাপড় দিয়ে দোকান-পাট সাজানো হয়েছে। জমে উঠেছে ঈদ বাজার। দিন-রাত পর্যন্ত বেচা-কেনা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে ক্রেতারা। আইনশৃংখলা বাহিনীর নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামশেদ আলম রানা বলেন, প্রত্যেকটি হাট-বাজার ও শপিং মহলের ব্যবসায়ীরা যেন অতিরিক্ত দাম নিতে না পারে। সে জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে। যদি কোন ভোক্তা হয়রানীর শিকার হয়, তাহলে ওই ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পুলিশ সুপার মো. তারেক বিন রশিদ বলেছেন নির্বিগ্নে ও নিরাপদে মার্কেটে যেন কেনাকাটা করতে পারে পুলিশের পক্ষ থেকে চার স্তরের আইনশৃংখলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। চুরি, ডাকাতিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আড়াই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। এ সিসিটিভির মাধ্যমে দ্রুত অপরাধীদের চিহিৃত করা যায়, সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।