
কুমিল্লায় গলা কেটে যুবককে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে বালু চাপা দেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)।
র্যাব জানায়, ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে মো. সিরাজুল ইসলাম (২৭) কে আটক করা হয়। তিনি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার মোহনপুর গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক চাকুরিচ্যুত সদস্য। তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
হত্যার নৃশংস ঘটনা
গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ থানার মোস্তফাপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের বালুর নিচে থেকে আমিনুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় কৃষক ফরিদ উদ্দিন তার ফসলি জমিতে যাওয়ার পথে বালুর স্তূপে রক্ত দেখে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
ভিকটিম আমিনুল ৯ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট ভ্রমণের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। সর্বশেষ তিনি ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলে তার পিতার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
প্রতারণা ও হত্যার পরিকল্পনা
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সিরাজুল নিজেকে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমিনুলের কাছ থেকে চাকরির প্রলোভনে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা ফেরতের চাপ দেওয়ায় আমিনুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে সিরাজুল।
৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিল্লার পদুয়ার বাজারের একটি আবাসিক হোটেলে আমিনুলকে আটকে রেখে সিরাজুলসহ সহযোগীরা হত্যার পরিকল্পনা করে। ১০ সেপ্টেম্বর রাতে তারা মোস্তফাপুর এলাকায় বালু ভরাট জমিতে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে এবং লাশ বালু চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিরাজুল হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তাকে আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তারা চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ডাকাত ও প্রতারকসহ নানা ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতার করে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। এই মামলাটিও তার ব্যতিক্রম নয়।