বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দির যমুনা নদী ভাঙনের ফলে কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামের একাংশ যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল বিকেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ একের পর এক বাড়ি-ঘর যমুনার গর্ভে চলে গেলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ন কবির জানান- এই ভাঙন রাতে ঘটলে বহু প্রানহাণী ঘটে যেতো। কারণ চোখের পলকে একে-একে শতাধিক বাড়িঘর যমুনায় তলিয়ে গেলো। উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সারারাত কাজ করেছে। রাক্ষুষে যমুনার কাছে ছিল মানুষের অসহায় আত্মসমর্পণ।
বসতবাড়ির টিনের চালা ভাসছে যমুনায়। খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছেন ভাঙনের শিকার এলাকাবাসী। ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে পুরো এলাকায়।
নদী ভাঙনের শিকার মৃত গোলাম মোস্তাফার স্ত্রী স্বপ্না বেওয়া বলেন, বিকেল ৩টার দিকে দেখলাম যমুনা নদীতে প্রচন্ড আওয়াজ হচ্ছে। পরে দেখি আমার প্রতিবেশীরা তাদের বাড়িঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছোটাছুটি করছেন। পরে বুঝতে পারলাম নদী ভাঙছে। আমিও কোনকিছু না ভেবে আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছোটাছুটি করে নিরাপদ স্থানে রেখে আসা শুরু করলাম। কয়েক মিনিটেই দেখি আমার বাড়িঘর যমুনায় ভেঙে গেল। জিনিসপত্র রক্ষা করতে আমরা যমুনায় ঝাঁপ দিলাম। যমুনায় ঝাঁপ দিয়েও কোনও জিনিসপত্র বাঁচাতে পারিনি।
কামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাছেদুউজ্জামান রাসেল জানান, এ গ্রামের প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা হঠাৎ যমুনা নদীর ভাঙনে যমুনায় বিলীন হয়েছে। বিলীন হয়েছে প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি এবং তাদের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। ভাঙনের শিকার এলাকাবাসীকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়া হচ্ছে।
তবে ভাঙন শুরু হওয়ার পরপরই সেখানে গেছেন এবং ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীকে নানাবিধ সহযোগিতা করেছেন, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মন্টু, মেয়র মতিউর রহমান মতি, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজেশ কুমার চক্রবর্তী, কামালপুর ইউপির চেয়ারম্যান রাছেদুউজ্জামান রাসেল প্রমুখ।
সারিয়াকান্দি ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় বড় আকারের জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ভাঙনের শিকার এলাকাবাসীকে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়া হচ্ছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় খাবার সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙানরোধ চেষ্টা চালাচ্ছেন। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান কোন মানুষ অভুক্ত থাকবেনা। পর্যপ্ত খাবার মজুদ আছে ।
এ দিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া স্পারের মাটির স্যাংকের ভাঙন ঠেকতে সক্ষম হয়েছে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখনও সেখানে কাজ চলছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনার ৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রাবাহিত হচ্ছে।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC