
রাইজিং ডেস্ক
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিশু-কিশোর প্রতিভা অন্বেষণমূলক অনুষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তরুণ প্রজন্মের প্রতি এক জোরালো বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, তরুণদের শুধু দেশে নয়, বিশ্বেও সেরা হতে হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, যে ব্যক্তি নিজেকে আবিষ্কার করতে পারে, সে প্রকৃত অর্থেই এগিয়ে যেতে পারে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতাটি সেই আত্ম-আবিষ্কারের সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, "না হলে আমি কখনোই জানতাম না যে আমি ক্লাসে প্রথম হতে পারি।"
ড. ইউনূস প্রতিযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই আয়োজন আমাদের ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলে। "না হলে আমরা যেভাবে আছি, সেভাবেই থেকে যেতাম। প্রতিযোগিতা আমাদের জানায়—আমারও সক্ষমতা আছে, আমি আরও কিছু করতে পারি," বলেন তিনি।
তিনি বিশেষ করে যারা বিজয়ী হতে পারেনি, তাদের প্রতি অনুপ্রেরণামূলক বার্তা দেন। তিনি মনে করেন, যারা জিততে পারেননি, তাদের মনে একটি জেদ তৈরি হবে—‘আমি কেন পারলাম না?’। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই জেদই মানুষকে বদলে দেয়। এই প্রতিযোগিতা সেই প্রেরণা তৈরি করে। পরের বছর তারা আরও ভালো করবে, আরও এগিয়ে যাবে; এটাই আত্ম-আবিষ্কারের শুরু।"
প্রধান উপদেষ্টা এই সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যারা তাদের মেধা ও সময় দিয়ে বিচারকার্যে সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। তাদের জন্য এক জোরে হাততালি প্রাপ্য। তিনি আরও বলেন, অভিভাবকরাও প্রশংসার দাবিদার—কারণ তারা সন্তানদের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এই সাফল্যের অংশীদার।
[caption id="attachment_48360" align="alignnone" width="1200"]
‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস/ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং[/caption]
তিনি উল্লেখ করেন, এই হাততালিগুলো এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। সারা বাংলাদেশের নানা প্রান্তে যারা এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারা সবাই এই আনন্দের অংশীদার।
বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী উভয়কেই অভিনন্দন জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদের অভিনন্দন। আর যারা অংশ নিয়েও জিততে পারেননি, তাদেরও সমান অভিনন্দন—কারণ অংশগ্রহণ করাটাই বড় অর্জন।
মন্ত্রণালয় ও উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই প্রতিযোগিতা নতুনভাবে শুরু করার জন্য আমি উপদেষ্টাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।
তিনি অঙ্গীকার করেন, "আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব, কারণ এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।"
তিনি বলেন, এই প্রতিযোগিতা ফ্যাশন ডিজাইন, খাদ্য প্রস্তুতি, বিজ্ঞান, ব্যবসা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে নতুন প্রতিভা তুলে আনবে। কেউ ভালো গায়ক না হলেও ভালো বিজ্ঞানী হতে পারে, ভালো উদ্যোক্তা হতে পারে—এই প্রতিযোগিতা সেই সুযোগ তৈরি করে দেবে।
প্রথমবারের এই আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, এটা প্রথম আয়োজন, তাই কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকতেই পারে। এতে লজ্জার কিছু নেই, বরং এটি পরবর্তী আয়োজনকে আরও পরিপূর্ণ করবে। ভবিষ্যতে যেন আরও প্রতিভাবান অংশগ্রহণকারীকে আমরা আবিষ্কার করতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতায় সারা দেশের হাজারো শিশু অংশ নেয়। নাচ, গান, আবৃত্তি, কৌতুক, গল্প বলা, অভিনয়সহ মোট ১২টি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক ও বিভাগীয় পর্ব শেষে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের নিয়ে চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আজ প্রধান উপদেষ্টা ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC