নীতিগত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী মৌলবাদী হুমকির সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আপসের ঘটনা উদ্বেগজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত ও মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য গঠিত সমন্বয় কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈষম্যহীন ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিপন্থি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আপসকামী আচরণের পরিচায়ক বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এই উদ্বেগ প্রকাশ করে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “কতৃর্ত্ববাদী সরকারের বহুমাত্রিক ও নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ছাত্র-জনতা এমন ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে যা ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ সব বৈচিত্র্য ও মতাদর্শের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি ‘নতুন বাংলাদেশ’ বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও সুশাসিত হবে, যেখানে ধর্মীয় বা অন্য কোনও মতাদর্শ কারও ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না। কিন্তু আমরা আতঙ্কের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও বহুত্বের বিরুদ্ধে কুৎসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা ছড়িয়ে শঙ্কা ও হুমকির বাতাবরণ সৃষ্টির প্রচেষ্টা ক্রমেই উৎকট রূপ ধারণ করছে। এ ধরনের স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচার, হুমকির প্রতি নতি স্বীকার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আপস করছে। যার উদ্বেগজনক উদাহরণ হলো পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বাতিলের ঘটনা।”
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীসরকারের ক্ষমতার মূল ভিত্তি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মূলধারার বহুমত, অন্তর্ভুক্তি, সমঅধিকার ও অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শ। যার প্রতি অটুট থেকে সরকার তার ওপর অর্পিত রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হবে এবং সব প্রকার অশুভ শক্তি, বিশেষ করে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী মহলের সঙ্গে আপসের পথ দৃঢ়ভাবে পরিহার করবে বলে আশা প্রকাশ করছে টিআইবি।’