
সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (স্যাকমিড) ঢাকায় অবস্থিত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের বাসভবনে “এথিক্স, জেন্ডার সংবেদনশীলতা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা: মিডিয়া মাইন্ডসের জন্য এক আড্ডা” শীর্ষক একটি কর্মশালার আয়োজন করে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) এই কর্মশালাটি নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে পরিচালিত “ডিজিটাল ঝুঁকি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে প্রচারমাধ্যম কর্মী, ছাত্রী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নারীদের ক্ষমতায়ন” প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এই আড্ডার উদ্দেশ্য ছিল একটি মুক্ত ও চিন্তাপ্রবণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে মিডিয়া পেশাজীবীরা বর্তমান সময়ের মিডিয়া জগতের এথিক্স, জেন্ডার সংবেদনশীলতা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও মতামত ভাগাভাগি করতে পারেন।
সেশনটি পরিচালনা করেন নাজিয়া আফরিন মনামী, ইউল্যাব-এর অ্যাডজাঙ্কট ফ্যাকাল্টি এবং মিডিয়া বিশেষজ্ঞ, যিনি অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে একটি প্রাণবন্ত ও চিন্তাশীল আলোচনা পরিচালনা করেন।
কর্মশালায় অংশ নেন সাংবাদিক, সংবাদ উপস্থাপক, সাব-এডিটর, কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণির মিডিয়া ও উন্নয়ন পেশাজীবীরা।
গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতিদের মধ্যে ছিলেন কর স্টাউটেন, ফার্স্ট সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স), নেদারল্যান্ডস দূতাবাস; নামিয়া আখতার, সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজর (পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি), নেদারল্যান্ডস দূতাবাস; শেখ সাবিহা আলম, ব্যুরো চিফ, এএফপি; ইশরাত জাহান উর্মি, সিনিয়র রিপোর্টার ও উপস্থাপক, ডিবিসি নিউজ; রোকসানা আনজুমান নিকোল, সহকারী সম্পাদক ও উপস্থাপক, যমুনা টিভি; শরাফত হুসেইন, হেড অব ডিজিটাল, দৈনিক ইত্তেফাক; সারা ফাইরুজ জায়মা ও নিকিতা নন্দিনী, উভয়ই ফ্রিল্যান্স উপস্থাপক; মনজুর আল মাতিন, সিনিয়র উপস্থাপক, চ্যানেল ২৪; নূর-আ-জান্নাতুল ফেরদৌস, সিনিয়র সাব-এডিটর, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস; এবং স্বর্ণা রায়, সাব-এডিটর, দেশকাল।
এছাড়াও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা এবং স্যাকমিডের কর্মকর্তারাও অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা মিডিয়া চর্চায় নৈতিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, বিশেষ করে নারীদের উপস্থাপনা নিয়ে। তাঁরা বলেন, মূলধারার মিডিয়ায় নারী সাংবাদিকদের প্রায়ই স্টিরিওটাইপ এবং যৌনায়িত করে উপস্থাপন করা হয়।
আলোচনায় উঠে আসে নিউজরুমে জেন্ডার সংবেদনশীল কাঠামোর অভাব এবং সাংবাদিক, বিশেষ করে নারী সাংবাদিকরা যে ডিজিটাল হুমকির মুখোমুখি হন, সে বিষয়ে উদ্বেগ। অনলাইনে হয়রানি, গোপনীয়তার সুরক্ষা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেন।
এই আড্ডাটি ছিল এক আন্তরিক শেখার, একাত্মতার এবং কৌশল বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যা বাংলাদেশের মিডিয়া পরিবেশকে আরও নিরাপদ, নৈতিক এবং জেন্ডার সংবেদনশীল করে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।