বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মারামারির ভিডিও করার সময় সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মী মাহমুদুল হাসান তমালের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৯মে) বেলা আড়াই টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে মারামারির ভিডিও ধারনের সময় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তমাল আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি মোহাম্মদ এনামুল হোসেন মোবাইলে মারামারির ভিডিও ধারণ করলে ক্ষিপ্ত হন ছাত্রলীগ কর্মী মাহমুদুল হাসান তমাল এবং ভিডিও ডিলেটের নির্দেশ দেন। এর পরে তমালের দু’জন অনুসারী ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন, ছিনিয়ে নিতে না পারলে জোরপূর্বক ফোন থেকে ভিডিও ডিলেট করতে বাধ্য করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক জুনিয়র মেয়েকে মেসেঞ্জারে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সিনিয়র এক ছেলে আপত্তিকর মেসেজ দেন।
উক্ত মেসেজ দেওয়াকে কেন্দ্র করে আজ দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের ছাতিম চত্বরে মারামারির ঘটনা ঘটে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্য। সেই মারামারির ভিডিও ধারণ করায় ক্ষিপ্ত হন ছাত্রলীগ কর্মী মাহমুদুল হাসান তমাল এবং তারই নির্দেশে জোরপূর্বক ভিডিও ডিলেট করান তার দুই অনুসারী।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোহাম্মদ এনামুল হোসেন বলেন, আমি দুপুরের খাবার খেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বিইউ ক্যাফের দিকে যাই ৷ এ সময় মারামারির ঘটনা দেখে ভিডিও ধারণ করতে যাই। পাশে মোটরসাইকেলে বসে ছিলেন তমাল। তিনি দেখে বলেন, ‘এ ছেলে তুমি ভিডিও করছো কেন? ভিডিও ডিলেট কর’৷
এরপর জুবায়ের ও সিয়াম নামে তার দুই অনুসারী আমাকে ঘিরে ধরেন। ফের তমাল ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ট্রাশ ফাইলসহ ভিডিও ডিলেট করা। সাংবাদিক পরিচয় দিলে আরো উত্তেজিত হয়ে তমাল বলেন, ভিডিও ডিলেট কর। পরে জোরজবরদস্তি করে মোবাইল ফোন থেকে ভিডিও ডিলেট করতে বাধ্য করে সালেমীর সিয়াম ও জুবায়ের। সালেমীর সিয়াম ও জুবায়ের আইন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান তমাল বলেন, ঐ ছেলে ভিডিও করছিল। ওরে ভিডিও ডিলেট করতে বলি কিন্তু ও সাংবাদিক কিনা তা আমি জানি না। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরে আরো উত্তেজিত হয়ে ভিডিও ডিলেট করতে বলার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এরকম কোনো ঘটনাই ঘটে নি। ঘটনাটি যেন সামনে আর না বাড়ে তাই আমি ভিডিও ডিলেট করাই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আবদুল কাইউম বলেন, এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি৷ ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার পর ছাত্রলীগ কমিটি না থাকলেও মাহমুদুল হাসান তমাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের স্বঘোষিত নেতা দাবি করেন৷ প্রতিপক্ষকে হামলায় তার বিরুদ্ধে বরিশাল বন্দর থানায় একটি মামলা রয়েছে৷
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গা দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷