আজ মঙ্গলবার, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ এখনই’। মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বেশকিছু দাবি তুলে ধরেছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবির কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো, ‘আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ এখনই।’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আসকের তুলে ধরা দাবিগুলো হলো–
১. রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে যেকোনও ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যেমন-বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমের অভিযোগ, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এখতিয়ার বহির্ভূত আচরণের অভিযোগ উঠলে তা দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে এবং সম্পৃক্তদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শাস্তি দিতে হবে।
২. এ পর্যন্ত সংঘটিত সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. দেশের যেকোনও নাগরিককে আটক বা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
৪. মিথ্যা মামলা বা হয়রানিমূলক মামলা সংক্রান্ত যে অভিযোগুলো উঠেছে, সেগুলো আমলে নিয়ে অভিযোগের যথাযথ নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
৫. নাগরিকের সমবেত হওয়ার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
৬. শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার যথাযথভাবে চর্চার পরিবেশ তৈরি এবং জনদুর্ভোগ এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. পাশাপাশি ভিন্নমত প্রকাশকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ কিংবা কোনও ধরণের ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৮. মব লিঞ্চিংয়ের মতো ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পেশাদারত্বের আওতায় রেখে তাদের কর্ম-পরিধি নিশ্চিত করতে হবে।
৯. নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করতে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক আইনগুলোতে পরিবর্তন আনতে হবে।
১০. ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১১. ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরি করে কোনও সহিংসতার ঘটনা যেন না ঘটে, তার জন্য পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১২. এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
১৩. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিজ বিশ্বাস ও রীতি চর্চার অধিকার এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. মানবাধিকারকর্মী ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ দ্রুততার সঙ্গে সংশোধন করতে হবে।
১৫. কমিশনের প্রধান ও সদস্যদের নিয়োগের জন্য একটি উন্মুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
১৬. পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
১৭. কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মানবাধিকার সুনিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
১৮. দেশে সুস্থ রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিতের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
১৯. অভিবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও সহযোগিতায় বিদেশি দূতাবাসগুলোতে জরুরি হেল্পলাইন নম্বর চালুসহ অন্যান্য কল্যাণমূলক ব্যবস্থা বিস্তৃত করতে হবে।