বাংলাদেশে মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রকোপ আবারও বাড়ছে, যা জনমনে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সারা দেশে প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, এবং এর মধ্যে রাজধানীতে বরিশাল ও কুমিল্লা অঞ্চল থেকে আসা রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে।
রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের ভিড় বাড়ছে। মুগদা হাসপাতালে একই বিছানায় বাবা-ছেলের ডেঙ্গু চিকিৎসার দৃশ্য যেমন দেখা যাচ্ছে, তেমনি ডেঙ্গু আক্রান্ত দম্পতিরাও একসাথে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিশেষ করে কুমিল্লা থেকে আসা পরিবারগুলোর জন্য কে কার পাশে থাকবেন, তা এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একসময় ডেঙ্গু কেবল ঢাকাবাসীর দুশ্চিন্তা ছিল, কিন্তু এখন এই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরেও।
চলতি বছর বরিশাল ও কুমিল্লা বিভাগ থেকে আসা রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যাদের অনেকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ঢাকার হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মুগদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেকোনো সংখ্যক রোগী সামাল দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, "ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য আমাদের মূলত ফ্লুইড প্রয়োজন হয়, এবং আমাদের পর্যাপ্ত ফ্লুইড মজুত আছে। আমরা যেকোনো সংখ্যক রোগীকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দিতে সক্ষম।"
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নুরুল ইসলামও একই আশ্বাস দিয়ে বলেন, "আমাদের অনেক বেড খালি আছে, কোনো সমস্যা নেই। ওষুধপত্র, স্যালাইন সবকিছু পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে।"
ঢাকায় মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশন তাদের "গতানুগতিক" পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। এমন প্রতিশ্রুতি আগেও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু দৃশ্যমান পরিবর্তন খুব কমই এসেছে। এবার কতটা কার্যকর হয়, তা দেখার অপেক্ষায় নগরবাসী।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, "মশার ওষুধ বিতরণের পাশাপাশি আরেকটি বড় কাজ হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ইতোমধ্যে আমরা অনেক জায়গা পরিষ্কার করেছি। তারপরও যে সমস্ত জায়গাগুলো বাকি আছে, খুব দ্রুত সময়েই সেগুলো পরিষ্কার করে ফেলব।"
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, "ডেঙ্গুর প্রকোপ এখনও এমন পর্যায়ে যায়নি যে সাধারণ জনগণের মধ্যে ভয় বা আতঙ্ক তৈরি হবে। তবে কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে। ডেঙ্গুর চিকিৎসা সংক্রান্ত একটি নির্দিষ্ট প্রটোকল তৈরি করে তা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। আগে দিনে দু’বার মশানিধন ওষুধ ছিটানো হতো, এখন সন্ধ্যার পর আরেকবার অতিরিক্ত ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।"
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC